মিনহাজ আমান
নারীদের জিন্স ও ভূমিকম্প
একটি স্যাটায়ার থেকে যেভাবে ভুল তথ্য ও ভুয়া খবর জন্ম নেয় এবং টিকে থাকে
মিনহাজ আমান
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক-সিরিয়া ভূমিকম্পকে কেন্দ্র করে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে একটি দাবি ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দাবি করা হয় – পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ মাওলানা ফজলুর রহমান বলেছেন, মেয়েরা জিন্স পরছে তাই এত ভূমিকম্প হচ্ছে।
২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সময়ে এই দাবি দফায় দফায় সামাজিক মাধ্যমে এসেছে, এই বক্তব্যকে ধর্মান্ধতার সঙ্গে তুলনা করে অনেকে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন, কেউ আবার বিশ্বাস করে এর পক্ষে ধর্মীয় বিভিন্ন যুক্তি তুলে ধরেছেন; এটি নিয়ে দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে, ব্লগে ও গণমাধ্যমে অনেকে মতামতও লিখেছেন।
যে খবর নিয়ে এত কিছু, সেটিই আসলে সত্য নয়। পাকিস্তানের একটি স্যাটায়ার সাইট ২০১৪ সালে প্রথম এই ব্যাঙ্গাত্মক রচনা প্রকাশ করে যাকে সত্য ধরে নিয়ে ভারত, বাংলাদেশ এবং পশ্চিমা বেশ কিছু গণমাধ্যমও খবর প্রকাশ করে। পরবর্তীতে কয়েকটি গণমাধ্যম ভুল স্বীকার করে সংশোধনী দেয়, কিছু প্রতিষ্ঠান খবরটি রেখে দেয়, কিন্তু পু্রোনো খবরের সূত্র ধরে বার্তাটি সামাজিক মাধ্যমে বারবার ফিরে আসতে থাকে।
একটি তথ্য যাচাই করতে গিয়ে একটি স্যাটায়ার থেকে ভুয়া খবর, ভুয়া তথ্যের জন্ম ও দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়ার এই চমকপ্রদ চিত্র সামনে আসে। একটি স্যাটায়ার সাইটের জন্ম-মৃত্যু, জেন্ডার সংক্রান্ত গোঁড়া ধর্মীয় মতবাদ, গণমাধ্যমের ভুল ও মানুষের বিশ্বাস, ও সামাজিক মাধ্যমের কল্যাণে একটি ভুয়া খবর প্রতিষ্ঠিত হওয়ার মতো ঘটনাও এই গল্পের অংশ হয়ে ওঠে।
স্যাটায়ার থেকে জন্ম
নারীদের জিন্স পরিধানের সঙ্গে ভূমিকম্পের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন দেশের গণমাধ্যমে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তাদের কয়েকটিতে পাকিস্তানের খবরিস্তান টাইমসকে প্রধান সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এটি একটি স্যাটায়ার বা ব্যঙ্গধর্মী সাইট। ২০১৭ সালের ২৫ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকার ওয়েবসাইটটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।
সে সময় তাদের ওয়েবসাইট বন্ধ হওয়া নিয়ে একটি খবর ও সম্পাদকীয় প্রকাশ করে দেশটির অন্যতম প্রধান গণমাধ্যম ডন। সেখানে বলা হয়, পাকিস্তানভিত্তিক এই স্যাটায়ার ওয়েবসাইটে রাষ্ট্র ও সমাজের ত্রুটি-বিচ্যুতি নিয়ে বিভিন্ন লেখা প্রকাশিত হতো। তাদের ফেসবুক পেজটি এখনো সচল, তবে সক্রিয় নয়; এবং সেখানে সব শেষ পোস্ট করা হয়েছে ২০১৭ সালের জানুয়ারি মাসে।
খবরিস্তান টাইমসের সাইটটি এখন বন্ধ। কিন্তু ইন্টারনেট আর্কাইভে মূল ব্যাঙ্গাত্মক রচনাটির লিংক খুঁজে পায় ডিসমিসল্যাব, যা প্রকাশিত হয়েছিল ২০১৫ সালের ২২ মে। স্যাটায়ারটির শিরোনাম ছিল “মাওলানা ফজলুর রহমান কলস ফর মিলিটারি অপারেশন অ্যাগেইনস্ট জিন্স-ওয়্যারিং উইমেন।” এর আগেও তারা পাকিস্তানের রাজনীতিবিদ মাওলানা ফজলুর রহমানকে নিয়ে একাধিক ব্যাঙ্গাত্মক রচনা প্রকাশ করেছে।
অধুনালুপ্ত খবরিস্তান টাইমসের সহ-প্রতিষ্ঠাতা কুনওয়ার খুলদুন শহীদকে প্রশ্ন করা হয়, তারা এত নেতা থাকতে কেন ফজলুর রহমানকে নিয়েই স্যাটায়ারটি লিখলেন। তিনি বলেন, “ফজলুর রহমান পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান ইসলামপন্থী নেতা। তিনি অন্য যেকোন মোল্লার চেয়ে বেশি, ঘনঘন নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করেন এবং সেই সময়ে তিনি বিশেষ করে আলোচিত একটি নারী অধিকার বিলের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন।”
আরও অনুসন্ধান করতে গিয়ে দেখা যায়, এর প্রায় এক বছর আগে, ২০১৪ সালের পহেলা ফেব্রুয়ারি, পাকিস্তান টুডের ওয়েবসাইটে একই স্যাটায়ার প্রকাশিত হয়। তখন গণমাধ্যমটির স্যাটায়ার বিভাগের নাম ছিল “খবরিস্তান টুডে।” পরবর্তীতে এই “খবরিস্তান টুডে” একটি স্বতন্ত্র সাইট হিসেবে খবরিস্তান টাইমস নামে আত্মপ্রকাশ করে।
শহীদ জানান, তারা ২০১৩ সালে পাকিস্তান টুডের সহযোগিতায় প্রথম খবরিস্তান টুডে চালু করেন যা ২০১৪ সালে স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানে রূপ নেয়, এবং স্যাটায়ারটি প্রথমে খবরিস্তান টুডে এবং তারপর খবরিস্তান টাইমসে প্রকাশিত হয়।
তিনি বলেন, “যতদূর মনে পড়ে, দুই দফাতেই রচনাটি নিয়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর হয়েছিল, যেমনটা এখনো হচ্ছে।”
স্যাটায়ার যেভাবে খবর হলো
পাকিস্তানের দুটি স্যাটায়ার মাধ্যমে ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আলাদাভাবে একই ব্যঙ্গধর্মী রচনা প্রকাশিত হলেও, খবরটি বেশি ছড়ায় ২০১৫-তে। এই লেখা প্রকাশের কিছুদিন আগে, ২০১৫ সালের ২৫ এপ্রিল, নেপালে প্রচণ্ড ভূমিকম্প হয় এবং তাতে প্রায় ৯ হাজার মানুষ নিহত হন। তখন গোটা বিশ্বেরই মনোযোগ ছিল সেই ভূমিকম্পের দিকে।
খবরিস্তান টাইমস সে বছর ২২ মে স্যাটায়ারটি প্রকাশ করার পর “শেখইয়ারমামি” নামের একটি সাইট “আর্থকোয়েকস আর কজড বাই জিন্স-ওয়্যারিং উইমেন” শিরোনামে খবর হিসেবে এটিকে পোস্ট করে। শেখইয়ারমামি মূলত ইসলামী-উগ্রপন্থা বিরোধী একটি সাইট।
এরপর খবরটি লুফে নেয় ভারতের একাধিক গণমাধ্যম। ৩০ মে ও তারপরে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দ্য কুইন্ট, ইন্ডিয়া টাইমস, ডেকান ক্রনিকলসহ বেশ কিছু পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে স্যাটায়ারটি খবর হিসেবে প্রকাশিত হয়। জিনিউজ বাংলা, ভারতের হিন্দি ভাষার পত্রিকা জাগরণ, এবং আফগানিস্তান ভিত্তিক খামা প্রেসেও একই খবর বেরোয়। এদের মধ্যে খামা প্রেস, উৎস হিসেবে খবরিস্তান টাইমসের নাম উল্লেখ করে।
ভারতীয় পত্র-পত্রিকার সূত্র ধরে পশ্চিমা অনেক গণমাধ্যমও স্যাটায়ারটিকে খবর হিসেবে প্রকাশ করে। যেমন, যুক্তরাষ্ট্রের ফক্সনিউজ এবং যুক্তরাজ্যের ডেইলি স্টার ও এশিয়ান ইমেজ এই খবরটি প্রকাশ করে ভারতের নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের বরাতে। পরবর্তীতে নিউ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও ফক্সসহ একাধিক গণমাধ্যম ভুল-সংশোধনী প্রকাশ করেছে এবং বলেছে খবরটি মূলত একটি স্যাটায়ার সাইট থেকে আসা। কিছু গণমাধ্যম খবরটি সরিয়ে নিয়েছে, কিন্তু এখনো অনেক গণমাধ্যম ভুল-স্বীকার ছাড়াই খবরটি সাইটে রেখে দিয়েছে।
এমনকি নিউ ইয়র্ক টাইমসেও খবরটি প্রকাশিত (এবং পরে সংশোধিত) হয়। ওমেন ইন দ্য ওয়ার্ল্ডের ভেরিফায়েড টুইটার অ্যাকাউন্ট ও সংবাদ সাইট আল-আরাবিয়ায় এর স্ক্রিনশট ও উদ্বৃতি পাওয়া যায়। তবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের সেই লিংকটি এখন আর সক্রিয় নয়।
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে যেভাবে এসেছে
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে বাংলাদশি ব্যবহারকারীরা মেয়েদের জিন্সের কারণে ভূমিকম্প হয় বলে যে পোস্টগুলো করেছেন, তাদের বেশিরভাগের সঙ্গেই যুক্ত করা আছে দৈনিক কালের কণ্ঠের একটি খবর বা সেটির স্ক্রিনশট।
২০১৫ সালের ৩১ মে প্রকাশিত এই খবরে বলা হয়: “ইসলামাবাদে একটি সংবাদ সম্মেলনে জামিয়াত উলেমা-ই-ইসলামি ফজল (JUI-F)-এর মুখ্য মওলানা ফজলুর রহমান বললেন মেয়েদের জিন্স পরাই ভূমিকম্পের মতো বিপর্যয়ের কারণ।”
কালের কণ্ঠের খবরে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি, তবে ভারতের জি-বাংলার সাইটে প্রকাশিত খবরের সঙ্গে তাদের ভাষা অনেকটাই মিলে যায়। একই মাসে এই খবর বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২) প্রকাশিত হয়।
এনটিভি অনলাইনে প্রকাশিত খবরে সূত্র হিসেবে বলা হয়, “জমিয়ত উলেমা-ই-ইসলামের মুখপত্র শেখইয়ারমামি ডট কমে আজ শনিবার এ-সংক্রান্ত একটি খবর প্রকাশিত হয়।” এই শেখইয়ারমামি আসলে সংবাদ সাইটই নয়।
এ দাবির উপর ভিত্তি করে জাগোনিউজ ২৪-এ একটি মতামতও প্রকাশিত হয়েছে। এর বাইরে ফিচার রিপোর্টে এবং একাধিক বাংলা ব্লগেও প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে। প্রতিটি খবরই এখনো ওয়েবসাইটগুলোতে রয়ে গেছে।
স্যাটায়ার কেন খবর হয়
খবরিস্তান টাইমসের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ, এখন দ্য ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনে কাজ করেন। তিনি বলেন, “সাংবাদিকেরা যেকোনো খবর পরিবেশনের আগে যদি দুমিনিট সময় ব্যয় করে খবরটির উৎসে – হোক তা অনলাইন পোর্টাল, সোশ্যাল মিডিয়া পেজ বা ছদ্ম অ্যাকাউন্ট – একটু নজর দেন তাহলেই তারা ধরতে পারবেন এটা খবর নাকি স্যাটায়ার।”
তাঁর মতে, “দুর্ভাগ্যবশত, যখন কোনো গণমাধ্যম একটি স্যাটায়ার প্রকাশ করে তখন এর একটি ডমিনো প্রভাব তৈরি হয়। এতে অন্য গণমাধ্যমগুলো তাদের অলসতা বা বেশি ক্লিকের আশায় সেটিকে সত্য খবর হিসেবে প্রকাশ করে ফেলে।”
মার্কিন গণমাধ্যম দ্য বিস্টে প্রকাশিত এক মতামতে বলা হয়েছে যে, বিখ্যাত স্যাটায়ার ওয়েবসাইট দ্য অনিয়নে প্রকাশিত ব্যঙ্গধর্মী রচনা নিউ ইয়র্ক টাইমস, ইএসপিএনসহ মূলধারার গণমাধ্যমকে অন্তত ৯ বার বোকা বানিয়েছে। চাঁদে মানুষ যাওয়া নিয়ে অনিয়নে প্রকাশিত একটি ষড়যন্ত্রতাত্ত্বিক স্যাটায়ার, খবর আকারে বাংলাদেশের গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছিল।
সামাজিক মাধ্যমে যেভাবে এসেছে এবং রয়ে গেছে
গত ৬ ফেব্রুয়ারি তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ফেসবুকে কয়েকজন ব্যবহারকারীকে ভূমিকম্প ও নারীদের জিন্স নিয়ে পোস্ট (১, ২, ৩, ৪, ৫) করতে দেখা যায়। এসব পোস্টের বেশিরভাগই ছিল সমালোচনামূলক। অর্থ্যাৎ তারা “নারীরা জিন্স পরে বলে ভূমিকম্প হয়” দাবিটিকে বিশ্বাস করেননি কিন্তু এই বক্তব্য যে পাকিস্তানের একজন মাওলানার মুখ থেকে এসেছে সেটি বিশ্বাস করেছেন এবং এধরনের উক্তির সমালোচনা করেছেন।
২০১৫ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে একাধিক বছরে ফেসবুকে (২০২২, ২০২১, ২০১৮, ২০১৭, ২০১৬, ২০১৫) এ সংক্রান্ত পোস্ট হতে দেখা গেছে। এই গবেষণায় দেখা গেছে, ২০১৮, ২০২১ এবং ২০২২ সালে এই পোস্টগুলো যখনই সামাজিক মাধ্যমে এসেছে ঠিক সে সময়টাতে বিশ্বের কোথাও না কোথাও একটি বড় ধরনের ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটেছে।
এদের সবই যে সমালোচনামূলক ছিল তা নয়। বরং কিছু ব্যবহারকারী (১, ২, ৩, ৪, ৫) সরাসরি অথবা বিভিন্ন যুক্তিতে নারীদের জিন্স পরার মতো জীবনাচারের সঙ্গে ভূমিকম্পের সম্পর্কের সমর্থনে যুক্তিও দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
খবরিস্তান টাইমসের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমানে ক্রাইসিস রেসপন্স জার্নালের প্রকাশনা সম্পাদক লুয়াভাত জাহিদ ডিসমিসল্যাবকে বলেছেন, “আমাদের কিছু নেতা প্রায়ই এমন আজেবাজে কথা বলেন, যে কারণে আমরা যাকে ব্যঙ্গাত্মক বলতে চেয়েছি তা অনেকে সত্য বলে ধরে নিয়েছেন; আর আমার মনে হয় এই বিশেষ স্টোরিটি ভাইরাল হওয়ার এটিও একটি কারণ।”
ধর্ম, দুর্যোগ ও মানুষের বিশ্বাস
মানুষের জীবনাচরণের সঙ্গে দুর্যোগের সম্পর্ক নিয়ে বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন দেশের, বিভিন্ন ধর্মের, ধর্মীয় বক্তারা এধরনের বক্তব্য রেখেছেন। যেমন: ২০১০ সালে ইরানের ধর্মীয় নেতা কাজিম সাদেগি বলেছিলেন, “অনেক নারী যারা শালীন পোশাক পরে না… (তারা) যুবকদের বিপথে নিয়ে যায়, তাদের সতীত্ব নষ্ট করে এবং সমাজে ব্যভিচার ছড়িয়ে দেয়, এর ফলে ভূমিকম্প বৃদ্ধি পায়।” তার এই বক্তব্য নিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে খবর প্রকাশিত হয়।
ইউনিভার্সিটি অব ব্রিটিশ কলম্বিয়ার ধর্ম ও নৃবিজ্ঞান বিষয়ের অধ্যাপক সাবিনা ম্যাগলিওকোর মতে, কেয়ামত বা মহাপ্রলয়ে বিশ্বাস রাখে এমন গোষ্ঠীগুলো বড় ধরনের বিপর্যয়ের মাঝে ধর্মীয় সংকেত খুঁজে পায়।
২০১৬ সালের অক্টোবরে ইতালিতে একটি ভূমিকম্প হয়েছিল এবং এরপর জিওভানি কাভালেকোলি নামের এক ধর্মযাজক বলেছিলেন যে সমকামীদের বিয়ের (সিভিল ইউনিয়ন) মতো প্রথার একটি “ঐশ্বরিক শাস্তি” হল ভূমিকম্প। এই কথা বলার পর, ভ্যাটিক্যানও এই যাজকের ওপর চটে যায়।
২০১৮ সালে ভারতের কেরালায় একটি ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল। তখন তামিলনাড়ুর হিন্দু জাতীয়তাবাদী দল হিন্দু মাক্কাল কাচি (এইচএমএক) এর এক নেতা দাবি করেছিলেন, শবরীমালা মন্দিরে নারীদের প্রবেশ করতে দেওয়ার কারণেই কেরালায় বন্যা হয়েছে। তার এই বক্তব্য সে সময় সমালোচিত হয়।
“আ কনটেন্ট অ্যানালাইসিস অব সোশ্যাল মিডিয়া ইউজারস রিয়্যাকশন টু রিলিজিয়াস ডিজইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ” শীর্ষক গবেষণায় গবেষক মো. সাঈদ আল-জামান দেখতে পান, সামাজিক মাধ্যমে ৬২ শতাংশ মানুষই ধর্মীয় ডিজইনফরমেশন বা অপতথ্যের প্রতি আবেগনির্ভর প্রতিক্রিয়া দেখান। যুক্তি দিয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন মাত্র ৩৮ শতাংশ ব্যবহারকারী।
** তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণায় সহায়তা করেছেন তামারা ইয়াসমীন তমা।