সুদেষ্ণা মহাজন অর্পা

ভারতীয় ইউটিউবারের সাজানো ভিডিওকে বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের দাবিতে প্রচার
সুদেষ্ণা মহাজন অর্পা
ঢাকার বনানীতে প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ করে ফেলে রাখা হয়েছে এমন দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, মূল ভিডিওটি ‘ওমা মেজেম’ নামক ভারতীয় একটি ইউটিউব চ্যানেলে গত ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে। একটি সাজানো ভিডিওকে প্রচার করা হচ্ছে ধর্ষণ পরবর্তী ভিডিও বলে।
গত ৫ ডিসেম্বর সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকের ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওর বিবরণে লেখা, “ঢাকা বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ করে ফেলে যায় তিন যুবক..আজকে আমাদের মেয়ে দের হচ্ছে কালকে আপনাদের মেয়ে দের হবে। যেমন কর্ম করবেন তেমন ফল পাবেন। মনে রাখবেন। সময় কিন্তু আমাদের ও আসবে।”
মন্তব্যের ঘরে একজন লিখেছেন, “মহাজন হটাও দেশ বাচাও—-জয়বাংলা।” আরেকজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “পাকিস্তানের মত সুরু হয়ে গেছে।” এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগ পর্যন্ত ভিডিওটি ১ লক্ষ ৪৮ হাজার বারের বেশি দেখা হয়েছে এবং ৬০০ বারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে।
ফেসবুকের একাধিক ব্যক্তিগত প্রোফাইল (১, ২, ৩, ৪, ৫), পেজ (১, ২) এবং গ্রুপ (১, ২, ৩) থেকেও ভিডিওটি পোস্ট করা হয়েছে। ইনস্টাগ্রামেও একই দাবিতে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে।

১৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, দিনদুপুরে এক নারী রাস্তায় গড়াগড়ি দিচ্ছে। পাশে একটি পানির বোতল এবং একজোড়া স্যান্ডেল বিচ্ছিন্নভাবে পড়ে আছে। ব্যাকগ্রাউন্ডে এক ব্যক্তিকে কথা বলতে শোনা যাচ্ছে। ঘটনার বর্ণনায় তাকে বলতে শোনা যায়, “ঢাকা বনানী, একটি গলির ভিতর ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণ করে চলে যায় তিনটি যুবক। দেখুন বোনটি অসহায়ভাবে পড়ে আছে। কিন্তু কেউ ধরতেছে না। সবাই দ্রুত শেয়ার করে দিবেন।”
সূত্র যাচাইয়ে, ভিডিওর বিভিন্ন কিফ্রেম ধরে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে ইউটিউবের একটি শর্টস ভিডিও। “ওমা মেজেম” নামের একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে ৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত ভিডিওর সাথে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির ব্যাকগ্রাউন্ডের কথা ছাড়া বাকি দৃশ্যের হুবহু মিল পাওয়া যায়। সেই ভিডিওর শিরোনামে লেখা, “নাপাতি হাজোয়ারি বিবারি বড়ো ফানি ভিডিও🤣”… ভিডিওর নিচে কমেডি, শর্টস, ফানি, বড়ো কমেডি এসব হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করা হয়েছে।
চ্যানেলটি যাচাই করে ওই নারীর একাধিক ভিডিও খুঁজে পাওয়া যায়। বেশির ভাগ ভিডিও মজার ছলে তৈরি। ইউটিউবে ওই চ্যানেলের বিবরণ সেকশনে গিয়ে দেখা যায়, @Bodo_credit ইউজার নাম দিয়ে চলতি বছরের ২১ মে চ্যানেলটি খোলা হয়েছে। ভারত থেকে চ্যানেলটি তাদের কন্টেন্ট কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
অর্থাৎ, ভিডিওর সঙ্গে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের দাবিটি সঠিক নয়।
অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যম যাচাই করে, সম্প্রতি বনানীতে ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের কোনো অভিযোগ বা এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।

