নোশিন তাবাসসুম

মবের হাতে ছাত্রলীগ কর্মী নির্যাতনের নয়, ভিডিওটি আসামির সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির
নোশিন তাবাসসুম
ছাত্রলীগ কর্মীকে মব সন্ত্রাসীরা নির্যাতনের পর হাতে হাত কড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ছড়িয়ে এ দাবি করা হয়েছে। ডিসমিসল্যাব ফ্যাক্টচেক করে দেখেছে, ভিডিওটি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে এক আসামির সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনার।
ফেসবুকের একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ভিডিওটি পোস্ট করা হয়। ২১ সেকেন্ড দীর্ঘ ভিডিওটির ক্যাপশনে লেখা, “ছাত্রলীগ কর্মীকে মব সন্ত্রাসীরা নির্যাতনের পর হাতে হাত কড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। কথা হলো মব সন্ত্রাসীদের হাতে পুলিশের হাত কড়া এলো কি ভাবে?” ফেসবুকের একাধিক (১, ২) ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকেও একই দাবিতে ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়।

ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে কিফ্রেম ধরে সার্চ করলে, গত ৬ ডিসেম্বর জাগো নিউজ এর ভেরিফায়েড ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত একই ফুটেজের একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ভিডিওর ক্যাপশনে বলা হয়, “আসামি ধরতে যাওয়া পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ভিডিও ভাইরাল |” ১ মিনিট ৩৯ সেকেন্ড দীর্ঘ এই ভিডিওর ৩২ সেকেন্ড থেকে ৫৩ সেকেন্ডের সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির হুবহু মিল আছে।
এ ঘটনা নিয়ে অধিকতর যাচাই করলে জাগো নিউজের ৬ ডিসেম্বরে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ছিল, “আসামি ধরতে যাওয়া পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি, ভিডিও ভাইরাল।” এই প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সাথে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর দৃশ্যের হুবহু মিল রয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, “উপজেলার বাংলা বাজার ইউনিয়নের ঝুমগাঁও সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে অবৈধ গরু নিয়ে আসার পথে গত ১৫ জুন রাতে বিজিবি সদস্যরা বাধা দিলে তাদের ওপর সংঘবদ্ধ হয়ে হামলা চালায় চোরাকারবারিরা। পরে ১৬ জুন বিকেলে ১৫ জন চোরাকারবারিকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করে বিজিবি। ওই মামলার এজাহারভুক্ত ৪ নম্বর আসামি রফিকুল ইসলাম রাব্বিকে দোয়ারাবাজার থানার এসআই মনিরুল ছদ্মবেশে ধরতে গেলে চোরাকারবারি ও পুলিশের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে।”
এ ঘটনা নিয়ে একাধিক (১, ২, ৩) সংবাদ মাধ্যম প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ৬ ডিসেম্বরে প্রকাশিত নতুন সিলেটের একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, “ঘটনাস্থলে থাকা দোয়ারাবাজার থানার এস আই মনিরুল বলেন, বিজিবির ওপর হামলার ঘটনায় মামলার আসামিকে ধরতে গেলে আসামি ধস্তাধস্তি শুরু করে। তার পরিবারও আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।”

দোয়ারাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুল হক বলেন, “বিজিবির ওপর চোরাকারবারিদের হামলার ঘটনার ৪ নম্বর এজাহারভুক্ত আসামিকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে এসেছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন। তাই পুলিশ ছদ্মবেশ নিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।”
তবে কোনো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনেই রফিকুল ইসলাম রাব্বির রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
অর্থাৎ, ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে এক আসামির সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তির ঘটনার যা মিথ্যা দাবিতে ছড়ানো হচ্ছে।