তামারা ইয়াসমীন তমা
স্ট্রিককে নিয়ে এক টুইটে ধরাশায়ী দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম
তামারা ইয়াসমীন তমা
একটিমাত্র টুইট কীভাবে মুহূর্তের মধ্যে পুরো বিশ্বে হইচই ফেলে দিতে পারে এবং দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমকেও বোকা বানিয়ে দিতে পারে, তার আদর্শ উদাহরণ হয়ে থাকবে জিম্বাবুয়ের সাবেক ক্রিকেটার হিথ স্ট্রিকের ভুয়া মৃত্যুর খবর ছড়ানোর ঘটনাটি।
জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক পেস বোলিং কোচ হিথ স্ট্রিক মারা গেছেন– এমন তথ্য দিয়ে একটি টুইট করেছিলেন জিম্বাবুয়ের আরেক সাবেক ক্রিকেটার হেনরি ওলোঙ্গা। তাঁর টুইটের বরাত দিয়ে স্ট্রিকের মৃত্যু সংবাদ প্রচার করে রয়টার্স ও দ্য গার্ডিয়ানের মতো গণমাধ্যম। ওলোঙ্গার টুইট ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের সূত্র দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও (১, ২, ৩, ৪, ৫) এই মৃত্যু সংবাদ প্রচারিত হয়।
পরবর্তীতে সেই হেনরি ওলোঙ্গাই আবার নতুন একটি টুইটে জানান যে, স্ট্রিকের মৃত্যু সংবাদটি সঠিক ছিল না। তিনি স্ট্রিকের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপে কথোপকথনের একটি স্ক্রিনশটও সেই টুইটের সঙ্গে যুক্ত করেন। নতুন টুইটটি করার আগে তিনি আগের টুইটটি মুছে দেন, যেখানে তিনি স্ট্রিকের মৃত্যুর খবর জানিয়েছিলেন। তবে টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে ওলোঙ্গার সেই টুইট বার্তার স্ক্রিনশট পাওয়া যায়।
এবার গণমাধ্যমগুলোতে শুরু হয় খবর সংশোধনের প্রক্রিয়া। অনেকেই এই মৃত্যু সংক্রান্ত খবরটি সরিয়ে নেয়, অনেকে প্রকাশিত সংবাদের সঙ্গে সংশোধনী যুক্ত করে।
যে ওলোঙ্গার টুইট থেকে এই মৃত্যু গুজবটি ছড়িয়েছে, তাঁর টুইটের ওপরই আবার বিশ্বাস করা যাবে কিনা– সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন এমন প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ। ওলোঙ্গার টুইটটির কমেন্টে একজন লিখেছেন: “আমি বিভ্রান্ত। তিনিই তো আগে এই মৃত্যু নিয়ে টুইট করেছিলেন।” আরেক টুইটার ব্যবহারকারীর কমেন্ট: “হিথ স্ট্রিক নিজে কী কোনো আপডেট শেয়ার করবেন? ব্যাপারটি অদ্ভুতুড়ে হয়ে যাচ্ছে।”
শেষপর্যন্ত হিথ স্ট্রিককেই জানাতে হয়েছে যে, তিনি বেঁচে আছেন। মিডডে ও ডেকান ক্রনিকলের মতো গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি তাঁর বেঁচে থাকার খবর নিশ্চিত করেছেন। জিম্বাবুয়ে ভিত্তিক গণমাধ্যম দ্য ক্রনিকলকেও স্ট্রিকের বেঁচে থাকার খবর নিশ্চিত করেছেন তাঁর মা ক্যারেন স্ট্রিক।
এর আগে গত মে মাসে হিথ স্ট্রিকের কোলন ও লিভার ক্যান্সার ধরা পড়ে। চিকিৎসার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকায় নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা জানান তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ।