ডিসমিসল্যাব

অফিসিয়াল ডেস্ক
ভুল তথ্য ও বাংলাদেশ – একটি প্রাথমিক গবেষণা
This article is more than 1 year old
magnifying-glass-gdb0109301_1920

ভুল তথ্য ও বাংলাদেশ - একটি প্রাথমিক গবেষণা

ডিসমিসল্যাব
অফিসিয়াল ডেস্ক

বাংলাদেশে ইন্টারনেট বহুল প্রসারের সাথে বাড়ছে সামাজিক মাধ্যম ব্যবহারকারীর সংখ্যাও। ২০১৭ সালের গ্লোবাল ডিজিটাল স্ট্যাটশটের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সক্রিয় ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যার শহরের হিসেবে দিক দিয়ে ঢাকা আছে দ্বিতীয় অবস্থানে। এর বাইরে ইউটিউব এবং টিকটিক ব্যবহারকারীর সংখ্যাও বাড়ছে তুমুল হারে। টুইটার সে অর্থে জনপ্রিয় না হলেও ইন্সটাগ্রাম তরুনদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে চোখে পড়ার মত। পাশাপাশি ডিজিটাল দুনিয়ায় আছে কয়েক হাজার অনলাইন পোর্টাল। এত সব মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিশাল তথ্য-সমুদ্রে আছে ভুয়া, অযাচাইকৃত বা বিকৃত তথ্যের প্রচার।

গত বছর বাংলাদেশের অনলাইন দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভুয়া তথ্যের ধরন, যাচাইয়ের উপায় এবং এ সংক্রান্ত নানাবিধ উদ্যোগের চালচিত্র তুলে ধরে একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে শ্রীলঙ্কাভিত্তিক প্রতিষ্ঠান লার্ন এশিয়া। গবেষণাটি তৈরি করেছেন নানইয়াং টেকনোলজিক্যাল বিশ্ববিদ্যাল-ভিত্তিক গবেষক আয়েশা বিনতে তৌহিদ। ‘মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশঃ আ ব্রিফ প্রাইমার’ শিরোনামের এই গবেষণাপত্রটি পড়তে ক্লিক করুন এখানে। 

গবেষণাটির শুরুর অংশে দেখানো হয়েছে, বর্তমান বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কেমন এবং তারা কী ধরনের সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করছে। পাশাপাশি অনলাইন গণমাধ্যমের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। গুগল ট্রেন্ডে প্রাপ্ত তথ্যের হিসাবে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ‘গুজব’ শব্দটির সার্চ সবচেয়ে বেশি হয়েছিল। সেসময় পদ্মা সেতুতে শিশুদের মাথা লাগার গুজবটি ছড়িয়ে পড়ে। এছাড়া করোনার প্রারম্ভেও গুজব শব্দটি গুগল সার্চে চুড়ায় উঠেছিল।

ভুয়া তথ্য কিংবা গুজবের এই মহামারি ঠেকাতে বাংলাদেশের সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগগুলো নিয়েও আলোচনা উঠে এসেছে এই গবেষণা পত্রে। ভুয়া তথ্য মোকাবিলায় আইসিটি, এনটিএমসি, বিটিআরসিসহ অনেক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কিন্তু এসব উদ্যোগের কাছে ভুয়া তথ্যের আইনি সংজ্ঞা অস্পষ্ট। পাশাপাশি বিআইপিএসএস, সিজিএসসহ অনেক দেশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভুয়া তথ্য থেকে নাগরিককে সুরক্ষার উপায় নিয়ে কাজ করছেন। ইউল্যাবসহ একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়েও এ ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। 

এছাড়া এসব ভুয়া তথ্যকে যাচাই করে নাগরিককে সঠিক তথ্য প্রদানসহ অনলাইন মাধ্যমগুলোকে নিরাপদ রাখার জন্যে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশভিত্তিক একাধিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা। তার মধ্যে বিডিফ্যাক্টচেক, বুম বাংলাদেশ, ফ্যাক্টওয়াচ, যাচাই, রিউমার স্ক্যানার উল্লেখযোগ্য। 

এছাড়াও কর্পোরেট উদ্যোগে (প্রিনিউর ল্যাব, গ্রামীণ ফোন ইত্যাদি), এনজিও (SACMID), আন্তর্জাতিক নানা এনজিও (ইউনিসেফ, ইউএনডিপি ডিজিটাল খিচুড়ি চ্যালেঞ্জ) ভুল তথ্য মোকাবেলায় সক্রিয় ভূমিকা রাখছে।

এছাড়া গবেষণাটিতে ভুল তথ্য ছড়ানোর কিছু সাধারণ প্রবনতার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। সেগুলো হলো:

১। ‘মিডিয়ায় পাবেন না, এখনই শেয়ার করুন’ এ ধরনের চটুল কথাবার্তা যুক্ত থাকা

২। পোস্টের শেষে ‘Collected’ বা ‘সংগ্রহীত’ শব্দটি যুক্ত থাকা, যেখানে আসল পোস্টটির কোনো হদিশ থাকে না

৩। মানুষকে আবেগতাড়িত করার মাধ্যমে পোস্ট শেয়ার দিতে বলা

৪। পোস্ট শেয়ারের জন্যে নানা গিফট, ডিসকাউন্টের প্রতিশ্রুতি দেয়া

৫। বিশ্বস্ত সংবাদ মাধ্যমের ভুয়া উৎসের ব্যবহার (নামে কিংবা লোগোতে)

৬। পুরোনো খবরের ভিডিও, ছবি নতুন আঙ্গিকে সাম্প্রতিক ঘটনা বলে চালিয়ে দেয়া।

আরো কিছু লেখা