ডিসমিসল্যাব

অফিসিয়াল ডেস্ক
নির্বাচনের সময় অপতথ্য ছড়ানোর প্রবণতা নিয়ে গবেষণা
This article is more than 8 months old
Brexit Election 2019 Research Feature

নির্বাচনের সময় অপতথ্য ছড়ানোর প্রবণতা নিয়ে গবেষণা

ডিসমিসল্যাব
অফিসিয়াল ডেস্ক

২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যে “ব্রেক্সিট ইলেকশন”-খ্যাত সাধারণ নির্বাচন চলাকালে প্রচারিত ভুল তথ্যগুলো কীভাবে ছড়িয়েছিল– তা নিয়ে একটি গবেষণা করেছেন দেশটির লাফবরো ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সোশ্যাল সায়েন্সেস অ্যান্ড হিউম্যানিটিজের গবেষকরা।

গবেষণায় মূলত তিনটি বিষয় উঠে এসেছে। প্রথমত, মানুষ যখন নির্বাচনী প্রচারণামূলক সংবাদের জন্য সামাজিক মাধ্যমের ওপর বেশি নির্ভর করে, তখন তাদের সত্য কিংবা মিথ্যা তথ্যের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়ের ক্ষমতা কমে যায়। 

দ্বিতীয়ত, যারা সামাজিক মাধ্যম বেশি ব্যবহার করছেন, তাদের মধ্যে সত্য বক্তব্যের তুলনায় মিথ্যা বক্তব্য শেয়ারের প্রবণতা বেশি। 

তৃতীয়ত, কোনো সংবাদ মিথ্যা, সে সম্পর্কে ব্যবহারকারীরা যত বেশি নিশ্চিত হন, তাদের সেই সংবাদ শেয়ার দেওয়ার প্রবণতাও ততো বাড়ে। তবে অনুরূপভাবে সত্য সংবাদের নিশ্চয়তা বাড়লে সেগুলো শেয়ার দেওয়ার প্রবণতা বাড়তে দেখা যায় না। 

যুক্তরাজ্যের নির্বাচনের আগে প্রাপ্তবয়স্ক চার হাজার ১৮ জনের ওপর পরিচালিত দুটি অনলাইন জরিপের মাধ্যমে এই গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।

২০১৯ সালে যুক্তরাজ্যের প্রাপ্তবয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যার লিঙ্গ, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অঞ্চলভিত্তিক অনুপাত অনুসরণ করে জরিপ দুটি পরিচালিত হয়। প্রথমভাগে অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের ডেমোগ্রাফিক তথ্য, যুক্তরাজ্যের রাজনীতি সম্পর্কে নিজস্ব মতামত ও ক্যাম্পেইন এবং ভোটদানের আচরণ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য দেন। প্রতিটি জরিপে তাদের ১২টি করে নির্বাচনী প্রচারণামূলক সংবাদ ভাষ্য দেখানো হয়। 

প্রতিটি বক্তব্য দেখানোর পর অংশগ্রহণকারীদের জিজ্ঞাসা করা হয় তারা গত কয়েক সপ্তাহে এগুলো দেখেছেন কি না। এবং এই শিরোনামগুলো তারা সত্য মনে করছেন নাকি মিথ্যা। 

দ্বিতীয় জরিপে আরও ১২টি সংবাদ দেখানোর পাশাপাশি জিজ্ঞাসা করা হয়, এগুলো তারা অনলাইনে শেয়ার করবেন কি না। 

দুটি জরিপেই ১২টির মধ্যে ৮টি সংবাদের শিরোনাম ভুল ছিল। সব মিলিয়ে ২৪টি সংবাদ বক্তব্যের মধ্যে ১৬টি মিথ্যা, ৪টি প্লাসিবো ও ৪টি সত্য স্টেটমেন্ট রাখা হয়েছিল। এর মাধ্যমে দেখা হয়, অংশগ্রহণকারীরা সত্য ও মিথ্যা বক্তব্যের ক্ষেত্রে কেমন প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন এবং সেগুলো শেয়ার করবেন কি না।

যুক্তরাজ্যের শীর্ষ চার ফ্যাক্ট চেকিং সংস্থা বিবিসি রিয়েলিটি চেক, চ্যানেল ৪ ফ্যাক্ট চেক, ফুল ফ্যাক্ট ও ফার্স্ট ড্রাফট থেকে সংবাদ বক্তব্যগুলো সংকলন করা হয়েছিল। অনেক ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে তথ্যগুলো প্রচারিত হয়েছিল এবং ফ্যাক্ট চেকের মাধ্যমে গুজবগুলো খণ্ডন করা হয়েছিল। প্রতিটি জরিপে দুটো বানানো প্লাসিবো ভুয়া শিরোনামও রাখা হয়েছিল। 

অংশগ্রহণকারীরা কোনগুলো সত্য ও কোনগুলো মিথ্যা মনে করছে তা জিজ্ঞেস করার পাশাপাশি তারা কোন বক্তব্যগুলো শেয়ার করতে আগ্রহী– তাও জানতে চাওয়া হয়। এর মাধ্যমে দেখা হয়েছে: সত্য ও মিথ্যা খবর আলাদা করতে পারার সক্ষমতার সঙ্গে এগুলো সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করার কোনো সম্পর্ক আছে কি না। এছাড়া অংশগ্রহণকারীরা কোন কোন সংবাদ মাধ্যম দেখছেন বা পড়ছেন সেগুলোও জেনে নিয়ে বিস্তারিত তালিকা তৈরি করা হয়। 

অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা নির্বাচনী প্রচারণার সংবাদ পেশাদার সংবাদ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে সংগ্রহ করেছেন, তারাই সঠিকভাবে সত্য-মিথ্যার পার্থক্য করতে সফল হয়েছেন বেশি। অন্যদিকে যারা নির্বাচনী সংবাদের ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর অধিক পরিমাণে নির্ভরশীল ছিলেন, তাদের মধ্যে সত্য-মিথ্যা পার্থক্য নির্ণয়ে সফলতার হার ছিল কম।

এই বিষয়টি মিথ্যা খবর ছড়ানোর প্রবণতাকেও প্রভাবিত করে। মিথ্যা খবরগুলোকে যখন সঠিক ধরে নেওয়া হয়, তখন সেগুলো শেয়ার করার আশঙ্কাও বেশি থাকে। নির্বাচনী প্রচারণায় অপতথ্য ছড়ানোর ক্ষেত্রে এই ভিন্ন ধরনের মাধ্যম থেকে তথ্য পাওয়ার বিষয়টিও প্রভাব ফেলে। সম্পূর্ণ গবেষণাটি পড়ুন এখানে

আরো কিছু লেখা