ফাতেমা তাবাসুম
ফ্যানপেজের পোস্টকে খালেদ মুহিউদ্দীনের বক্তব্য বলে প্রচার গণমাধ্যমে
ফাতেমা তাবাসুম
সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীনের নামে পরিচালিত একটি ফেসবুক পেজের পোস্টকে তার দেওয়া বক্তব্য ধরে নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে একাধিক সংবাদমাধ্যমে। তবে ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা গেছে, এই পোস্ট বা মন্তব্য খালেদ মুহিউদ্দীনের নয়। পোস্টটি যে পেজ থেকে দেওয়া হয়েছিল, সেখানে বলাও আছে যে, এটি একটি ফ্যান পেজ।
গত ২১ মার্চ মূলধারার গণমাধ্যম দৈনিক জনকণ্ঠ, দৈনিক ইনকিলাব, সময়ের আলোসহ বেশকিছু সংবাদমাধ্যমের (১, ২, ৩, ৪, ৫) প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, খালেদ মুহিউদ্দীন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহকে নিয়ে একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়, এই সাংবাদিক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টের একটি পোস্টে লিখেছেন, “হাসনাত আব্দুল্লাহ যে সাহসটা দেখালো, যে প্রলোভন অগ্রাহ্য করলো সেটা বাংলাদেশের ইতিহাসে বিরল। তাঁর পাশে ছাত্র-জনতাকে দাঁড়াতে হবে।” (বানান অপরিবর্তিত)

প্রসঙ্গত, গত ২১ মার্চ দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ এক ফেসবুক পোস্টে জানান, সাবের হোসেন চৌধুরী, শিরীন শারমিন চৌধুরী ও শেখ ফজলে নূর তাপসকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগ পুনর্বাসনের একটি সম্ভাব্য প্রচেষ্টা চলছে, যা তিনি “রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ” বলে অভিহিত করেন। তিনি এই প্রচেষ্টা রুখে দেওয়ারও আহ্বান জানান। এরপর ২১ মার্চ, সকাল সোয়া ৯টায় সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে পোস্ট দিয়ে হাসনাতের বক্তব্যকে সাহসী উল্লেখ করে ছাত্র-জনতার সমর্থন চাওয়া হয়।

এরপরই পোস্টটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত সেখানে ১১ হাজার প্রতিক্রিয়া এবং এক হাজারের বেশি মন্তব্য করা হয়েছে। শেয়ার হয়েছে প্রায় আড়াই হাজারবার। অনেকেই পোস্টটিকে সাংবাদিক খালেদের বক্তব্য বলে ধরে নিয়েছেন। একজন মন্তব্য করেছেন, “একটা দেশ ও জাতিকে আলোকিত করলেন।”

এই পোস্টটিকে সূত্র ধরে ২১ মার্চ একাধিক গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয় যে হাসনাতকে সমর্থন জানিয়ে নিজ সোশ্যাল মিডিয়াতে বিশেষ বার্তা দিয়েছেন এই সাংবাদিক। এ ধরনের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর খালেদ মুহিউদ্দীন তার নিজস্ব ফেসবুক প্রোফাইল থেকে একটি পোস্ট করে জানান, আলোচিত পোস্টটির সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি লেখেন, “সাংবাদিক খালেদ মুহিউদ্দীন নামে চালু থাকা পেইজটি আমার নয়, এবং এর কোনো মতামতও আমার নয়। আমি ফেইসবুকে কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি জানিয়েছি।”
খালেদ মুহিউদ্দীনের নামে পরিচালিত ফ্যান পেজটি খোলা হয়েছিল ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে। পেজটির ফলোয়ার সংখ্যা এক লাখ তেত্রিশ হাজারের বেশি। ট্রান্সপারেন্সি অংশে দেখা যায়, সেটির এডমিন একজন এবং এটি পরিচালিত হচ্ছে সৌদি আরব থেকে। পেজটির বায়োতে আগে উল্লেখ করা ছিল, “এটি খালেদ মুহিউদ্দীনের ফ্যান পেজ”। ২১ মার্চ সেটি সম্পাদনা করে নতুনভাবে যুক্ত করা হয়েছে আরেকটি লাইন, “এই পেইজের কোনো মন্তব্য খালেদ মুহিউদ্দীন স্যারের নিজস্ব মন্তব্য নয়।”