আহমেদ ইয়াসীর আবরার

নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির পক্ষে-বিপক্ষে এআই লড়াই
আহমেদ ইয়াসীর আবরার
গ্রামীন একটি পরিবেশে তিন ব্যক্তি বসে আলাপ করছেন। একজন জিজ্ঞাসা করছেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনটা কেমন হয়”? আরেকজন উত্তর দিচ্ছেন, “ভোট দিলাম সন্দীপে, এমপি পেলাম মালদ্বীপে”। এরপর তিনজনই হেসে উঠছেন। প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থাকে এভাবেই ব্যাঙ্গাত্মকভাবে উপস্থাপন করতে দেখা গেছে সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো একটি ভিডিওতে। তবে ভিডিওর মানুষগুলো কোনো বাস্তব চরিত্র নন, বরং তাদের তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে।
পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি প্রয়োগের পক্ষে-বিপক্ষে নানা প্রচারণা (১, ২, ৩) দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশে। আর সামাজিক মাধ্যমে এই প্রচারণার অন্যতম হাতিয়ার হয়ে উঠছে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও। ৩০ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত, এমন অন্তত ১৩টি স্বতন্ত্র ভিডিও খুঁজে পেয়েছে ডিসমিসল্যাব, যেগুলো তৈরি করা হয়েছে গুগলের ভিডিও তৈরির টুল ভিও দিয়ে। এর মধ্যে পিআর পদ্ধতির পক্ষে ৩টি এবং বিপক্ষে ১০টি ভিডিও রয়েছে। পিআর-এর পক্ষের ভিডিওগুলোতে আবার একাধিক ভিডিও ও দৃশ্য যুক্ত করতে দেখা গিয়েছে।
২০২৪ সালের আগস্টে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর নির্বাচনী ব্যবস্থার সংস্কারের লক্ষ্যে যেসব প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম ছিল পিআর পদ্ধতির নির্বাচনী ব্যবস্থা। এ সংক্রান্ত আলোচনার পালে হাওয়া লেগেছে গত ২৮ জুন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসমাবেশ থেকে ১৬ দফা দাবি উত্থাপনের পর, যেখানে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনী ব্যবস্থা ছিল অন্যতম দাবি। এর প্রেক্ষিতেই প্রচারিত হতে দেখা যাচ্ছে এআই দিয়ে তৈরি এসব ভিডিও।

পিআর পদ্ধতির পক্ষে কী বলছেন এআই চরিত্ররা
নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি নিয়ে এআই প্রচারণার সবচেয়ে পুরোনো যে ভিডিওটি ডিসমিসল্যাব পায় সেটি পোস্ট হয় ২৯ জুনে। “ভয়েস অব রুবেল” নামের একটি পেজ থেকে ৪০ সেকেন্ডের এই ভিডিওটি পোস্ট হয়। পুরো ভিডিওতে মোট ৪টি ভিন্ন দৃশ্যের সংলাপ দেখানো হয়, যার প্রত্যেকটিতেই পিআর পদ্ধতিকে ইতিবাচকভাবে তুলে ধরা হয়।
এখানে পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে এক এআই চরিত্র বলে, “আনুপাতিক মানে যার যত ভোট, তার তত আসন”, উত্তরে আরেক ব্যক্তি বলছে, “ও, তাই নাকি? এইটা তো ইনসাফ”। আরেক দৃশ্যে আরেক এআই চরিত্র বলছে, “আনুপাতিক হইলে ভোট হারলেও আওয়াজ থাকত সংসদে।”
পিআর পদ্ধতির পক্ষে আরেকটি ভিডিও পোস্ট করা হয় গত ৩০ জুন। “জয়পুরহাট এক আসনের খবর” নামের পেজ থেকে পোস্ট হওয়া ২৪ সেকেন্ডের এই ভিডিওতে যুক্ত করা হয় তিনটি ভিন্ন দৃশ্য। প্রথম দৃশ্যে একজন যুবক এবং একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ব্যক্তিকে কথা বলতে দেখা যায়। শুরুতে যুবক বলে, “দাদা, আমি প্রত্যেকবার ভোট দিই, কিন্তু আমার ভোটটা নষ্ট হয়ে যায়।” উত্তরে অপর ব্যক্তি বলেন, “কারণ আমরা পিআর সিস্টেমে ভোট দিচ্ছি না। যদি পিআর সিস্টেমে নির্বাচন হয়, প্রতিটি ভোটের হিসাব থাকে, প্রতিটি দল সংসদে অংশ পায়।”

এরপরের দৃশ্যেই একজন বয়স্ক ব্যক্তি কিছুটা উঁচুতে দাঁড়িয়ে একদল মানুষকে বলছেন, “পিআর পদ্ধতি মানে হলো যে দল যত শতাংশ ভোট পাবে, ততগুলো আসন পাবে”। তার কথা শুনতে থাকা মানুষদের একজন বলে উঠে, “তাইলে আমার ভোট আর বৃথা যাবেনা? তাইলে তো পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনই ভাল। কি বলেন?” এইসময় সময় বাকিরাও তার কথায় সমর্থন জানায়।
এর ঠিক পরের দৃশ্যের আলাপ ইংরেজি ভাষায়। এখানেও একজন যুবক একজন বৃদ্ধ ব্যক্তিকে ইংরেজি ভাষায় বলছেন, “ভাই, আমি যতবারই ভোট দেই, আমার ভোট নষ্ট হয়।” এই সময় পেছন থেকে কয়েকজন লোক এগিয়ে আসেন এবং তাদের মধ্যে থেকে একজন ইংরেজিতে বলেন, “কারণ আমরা পিআর পদ্ধতিতে ভোট দিচ্ছি না। যদি নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হয়, তবে প্রত্যেকের ভোট গুরুত্ব পাবে।”
প্রতিটি দৃশ্য ৮ সেকেন্ডে শেষ হয়, যা গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ভিওর দিকে নির্দেশ করে। উল্লেখ্য, গুগলের ভিও-থ্রি এর মাধ্যমে বর্তমানে সর্বোচ্চ ৮ সেকেন্ডের ভিডিও তৈরি করা যায়।
পিআর পদ্ধতির প্রশংসার পাশাপাশি এর বিরোধীতাকারী রাজনৈতিক দলের সমালোচনাও করতে দেখা যায় একটি ভিডিওতে। “আবু বকর সিদ্দিক” নামের একটি প্রোফাইল থেকে ৩০ জুনে পোস্ট হওয়া ভিডিওটির শুরুতে দেখা যায় তিনজন যুবক হাঁটতে হাঁটতে কথা বলছে। তাদের মধ্যে একজন বললো, “যদি পিআর সিস্টেম থাকত, ভোটের প্রতিফলন একদম সঠিক হতো।” আরেকজন বললো, “আর কেউ একা ক্ষমতা নিয়ে স্বৈরাচার হতে পারতো না। এখন সবাই পিআর চায়। বিএনপি ছাড়া”। ঠিক পরেই আরেকটি দৃশ্যে আরেকজনকে বলতে শোনা যায়, “কারণ বিএনপি তাদের একচেটিয়ে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইছে। ঠিক আওয়ামী লীগের মতো।” এরপর আরেকজন যুবক বলে, “এটা আমরা হতে দিবো না ইনশাআল্লাহ।” পুরো ভিডিওটির নিচের ডান কোনে ‘ভিও’ লোগো দেখা যায়।
বিপক্ষে দেওয়া হচ্ছে কেমন যুক্তি?
পিআর পদ্ধতির নির্বাচনী ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও চলছে এআইয়ের মাধ্যমে ভিডিও তৈরি করে সামাজিক মাধ্যমে প্রচারণা। তবে এই ভিডিওগুলোর বেশিরভাগই হলো ব্যাঙ্গাত্মকভাবে তৈরি। পিআর পদ্ধতির পক্ষে পোস্ট হওয়া ভিডিওগুলোর প্রত্যেকটিতে একাধিক দৃশ্য দেখা গেলেও, এই পদ্ধতির বিরুদ্ধে হওয়া ভিডিওগুলোতে একক দৃশ্য দেখা গিয়েছে। অর্থাৎ, প্রত্যেক ভিডিওতে একটি করেই দৃশ্য ও কথোপকথন।
“বিএনপি’স পিপল মুভমেন্ট” নামের একটি পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় ১ জুলাইয়ে। সেখানে এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, “অযোগ্যরা করছে জোট, পিআর পদ্ধতিতে দিতে ভোট। ভোট দিব নোয়াখালী, এমপি হবে পটুয়াখালী।” ভিডিওটির নিচে ডান কোণে ‘ভিও’র লোগো দেখতে পাওয়া যায়।

একই ধরনের যুক্তি দেওয়া হয়েছে একই পেজ থেকে ১ জুলাইয়ে পোস্ট করা আরেকটি ভিডিওতে। যেখানে তিনজন ব্যক্তিকে চা পানরত অবস্থায় কথা বলতে দেখা যায়। ভিডিওতে একজন জিজ্ঞেস করেন, “পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনটি কেমন হয়?” উত্তরে আরেকজন বলেন, ভোট দিলাম সন্দীপে, এমপি পেলাম মালদ্বীপে।” একই ভিডিও অন্যান্য ব্যবহারকারীকেও পোস্ট করতে দেখা যায় (১, ২, ৩)।
এসব ভিডিওর মাধ্যমে এমন যুক্তি দেওয়া হচ্ছে যে, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে একটি নির্দিষ্ট আসনের ভোটাররা তাদের সাংসদ নির্বাচন করতে পারবেন না। রাজনৈতিক দল তাদের মোট প্রাপ্ত ভোটের ভিত্তিতে এলাকার সংসদ নির্বাচন করে দেবে।
২ জুলাই ‘ইয়ুথ নেটওয়ার্ক’ নামের পেজ থেকে পোস্ট হওয়া ভিডিওতে পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে এইচএসসি পরীক্ষায় কোনো বিষয়ে ফেল করার পরও মোট নম্বরের ভিত্তিতে পাশ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে তুলনা করে ব্যঙ্গ করা হয়েছে। ভিডিওটিতে একদল শিক্ষার্থীকে আন্দোলন করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা একত্রে স্লোগান দিয়ে উঠে, “এইচএসসি পরীক্ষা পিআর সিস্টেমে দিতে হবে।” এরপর একজন শিক্ষার্থী মাইক্রোফোন হাতে বলে, “পাঁচ সাবজেক্টে ফেল করলেও, গড়ে ৩৩ পাইলেই সব পাশ।” এরপর সকল শিক্ষার্থী স্লোগান দেয়, “পিআর চাই, পিআর চাই।” ভিডিওর নিচে ডান কোনে ‘ভিও’ লোগো দেখতে পাওয়া যায়।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং জামায়াতে ইসলামী পিআর পদ্ধতির পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় তাদের সমালোচনাও করা হয়েছে কিছু ভিডিওতে। যেমন, “মগবাজার” নামের পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয় যেখানে একজন বৃদ্ধ লোক ও একজন যুবককে কথোকথন করতে দেখা যায়। বৃদ্ধ লোকটি বলেন, “ভাই, চরমোনাইয়ের পীর সাহেব যে পিআর ভোটের কথা কয়, এইটা আসলে কী? উত্তরে অন্য ব্যক্তি বলেন, “বিয়ে করলে বাচ্চার আপনি বাপ, এইটা সাধারণ ভোট। আর বাচ্চার পাঁচটা বাপ, এইটাই পিআর ভোট।”
জামায়াতের নাম উল্লেখ করে একটি ভিডিও পাওয়া যায় যেখানে তিনজন ব্যক্তি বসে আছেন এবং কিছু মানুষ দাঁড়িয়ে তাদের ঘিরে কথা শুনছেন। বসে থাকা বৃদ্ধ ব্যক্তি বলেন, “শুনলাম জামায়েত আগামী নির্বাচনে পিআর সিস্টেম চাচ্ছে।” এরপর একটি কন্ঠ জিজ্ঞেস করে, “মাস্টার সাহেব! তারা পিআর সিস্টেম কেন চাচ্ছে?” এরপর একজন ব্যক্তি বলেন, “কারণ নির্বাচনে তাদের অধিকাংশের জামানত বাজেয়াপ্ত হলেও আল্লাহর রহমতে ৫-১০টা সিট পেয়ে যাবে।” আবার ভিডিওটির নিচে ডান কোনে ‘ভিও’ লোগোটিও দেখা যায়।
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে (পিআর) নির্বাচন আসলে কী?
সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন বা পিআর) একটি নির্বাচনী পদ্ধতি, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আসন বণ্টন তাদের প্রাপ্ত মোট ভোটের অনুপাতে করা হয়। এই পদ্ধতির মূল বৈশিষ্ট্য হলো প্রতিটি ভোটকে সংসদে প্রতিনিধিত্ব পাওয়ার একটি সুযোগ হিসেবে বিবেচনা করা, যাতে নির্বাচন শেষে আসনবিন্যাস ভোটের হারের কাছাকাছি হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পিআর পদ্ধতির ব্যবহার দেখা যায়, তবে এই পদ্ধতির ধরন ও প্রয়োগে পার্থক্য রয়েছে। যেমন, নেদারল্যান্ডসে পুরোপুরি একটি একক জাতীয় নির্বাচনী এলাকা ভিত্তিক তালিকাভিত্তিক পিআর ব্যবহৃত হয়, যেখানে ভোটাররা একটি দলকে ভোট দেন এবং দলীয় তালিকা অনুযায়ী প্রার্থীরা নির্বাচিত হন। অপরদিকে, জার্মানিতে “সংযোজিত/বাড়তি সদস্য” পদ্ধতি চালু রয়েছে, যেখানে ভোটাররা একটি ভোট প্রার্থীকে এবং আরেকটি ভোট দলকে দেন, ফলে এটি আংশিক সংখ্যানুপাতিক ও আংশিক সাধারণের সংমিশ্রণ।

পিআর পদ্ধতির পক্ষে যুক্তি হিসেবে বলা হয়, এটি একটি প্রতিনিধিত্বমূলক সংসদ গঠনে সহায়ক, যেখানে ভোটের হার ও আসনের সংখ্যা তুলনামূলকভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। এতে রাজনৈতিক ব্যবস্থায় ছোট দল, সংখ্যালঘু গোষ্ঠী কিংবা বিশেষ সামাজিক গোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। সমালোচকরা মনে করেন, এটি রাজনৈতিক বৈচিত্র্যকে স্বীকৃতি দেয় এবং রাজনৈতিক সমঝোতার পথ তৈরি করে। একইসঙ্গে, ভোটের অপচয়ের আশঙ্কা কম থাকে, কারণ অল্প ভোটপ্রাপ্ত দলও সংসদে আসন পেতে পারে।
অন্যদিকে, পিআর পদ্ধতির বিরোধিতায় বলা হয়, এটি প্রায়শই জোট সরকারের দিকে নিয়ে যায়, যা সিদ্ধান্ত গ্রহণে ধীরতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে এমন দলও নীতি নির্ধারণে ভূমিকা পায়, যাদের ভোটের হার খুবই কম, ফলে রাজনৈতিক অচলাবস্থার ঝুঁকি বাড়ে। এছাড়া, পিআর পদ্ধতিতে ভোটারদের স্বাধীনভাবে প্রার্থী বাছাই করার সুযোগ কম থাকে, এবং দলীয় নেতৃত্বের হাতে প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ে।
বিশ্বব্যাপী পিআর পদ্ধতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি দেশের রাজনৈতিক কাঠামো, সাংবিধানিক ধারা এবং নির্বাচন কমিশনের নীতিমালা অনুযায়ী ভিন্নতা দেখা যায়। কিছু দেশে প্রার্থীদের তালিকা থেকে ব্যক্তি বেছে নেয়ার সুযোগ থাকে, আবার কিছু দেশে শুধুমাত্র দলকে ভোট দেয়া হয় এবং দলীয় সিদ্ধান্তে প্রার্থী নির্বাচন হয়। আবার এমন পদ্ধতিও দেখা যায় যেখানে একটি দল নির্দিষ্ট শতাংশ ভোট না পেলে সংসদে আসন পাবে না, যেমন জার্মানিতে ৫ শতাংশ ভোট না পেলে সংসদে ঢুকতে পারে না।
বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে এআই দিয়ে তৈরি ভিডিও দিয়ে প্রচারণা শুরু হয়েছে। জুনের ৩০ তারিখে প্রকাশিত ডিসমিসল্যাবের একটি গবেষণায় দেখা যায় বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় গুগলের ভিও-৩ এর মাধ্যমে তৈরি ভিডিও ব্যবহার করা হচ্ছে।
গবেষণায় বলা হয়, “রাজনীতিতে ইতিপূর্বে ব্যবহৃত এআই-এর তুলনায় এই ভিডিওগুলোর পার্থক্য হলো এদের পুরোপুরি কৃত্রিম নির্মাণ। প্রত্যেকটি চেহারা, কন্ঠ এবং পরিবেশের বেশিরভাগই তৈরি করা হয়েছে ভিও (গুগলের একটি টেক্সট থেকে ভিডিও তৈরির মডেল) এর মাধ্যমে। অধিকাংশ ভিডিওতেই প্রকাশ করা হয়নি যে এগুলো এআই দিয়ে তৈরি এবং সেখানে কোনো এআই লেবেল নেই। বিশেষ করে ফেসবুকে, স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থাও এগুলোকে চিহ্নিত করতে ব্যর্থ হয়েছে।” বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এই ধরনের ভিডিও বাস্তবে ভোটারদের মনোভাব এবং নির্মিত তথ্যের মধ্যকার পার্থক্য মুছে দেয়, ফলে যথাযথ ডিজিটাল লিটারেসি ও নীতিমালা না থাকলে মানুষের চিন্তাকে খুব সহজে প্রভাবিত করা যাবে।