অ্যালেক্স মহাদেবন

চ্যাটজিপিটি মুহূর্তেই যেভাবে একটি ভুয়া পত্রিকা তৈরি করতে পারে
This article is more than 1 year old

চ্যাটজিপিটি মুহূর্তেই যেভাবে একটি ভুয়া পত্রিকা তৈরি করতে পারে

অ্যালেক্স মহাদেবন

সানকোস্ট সেন্টিনেল পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাইকেল মার্টিনেজ। তিনি একই সঙ্গে একজন খাদ্যরসিক, জ্যাজ সঙ্গীত প্রেমী, স্বেচ্ছাসেবী এবং অবসরে ফ্লোরিডার স্টেট পার্কে হাইকিং করেন।

সমস্যা একটাই; মার্টিনেজ বা তাঁর পত্রিকা সানকোস্ট, কারোরই বাস্তব অস্তিত্ব নেই।

অল্প কিছু তথ্য ইনপুট দেওয়ার পর ৩০ মিনিটেরও কম সময়ে আলোচিত নতুন এআই টুল চ্যাটজিপিটি মার্টিনেজকে নিয়ে পুরোদস্তুর একটি রচনা লিখে দেয় যা অনেকটা এমন- মার্টিনেজ ১৫ বছর ধরে সাংবাদিকতা করছেন। “একজন চমৎকার গুণী মেন্টর ও যোগ্য নেতা হিসেবে তার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে।” এবং তিনি অস্তিত্বহীন সানকোস্ট সেন্টিনেলের রিপোর্টার, এডিটর ও ফটোগ্রাফারদের জন্য অপরিহার্য ব্যক্তিত্ব।

কল্পিত সংবাদমাধ্যম সানকোস্ট সেন্টিনেলের জন্য কল্পিত ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মাইকেল মার্টিনেজের বায়ো তৈরি করছে চ্যাটজিপিটি। (অ্যালেক্স মহাদেবন/পয়েন্টার)

আমি যখন চ্যাটজিপিটির বানোয়াট ভুয়া পত্রিকা নিয়ে প্রথম লিখি, তখন হোয়াইট হাউজের সাবেক কর্মকর্তা টিম ভু টুইট করেন “আমি সত্যিই ভয় পাচ্ছি”। টিম ভু ২০০৩ সালে প্রথমবারের মতো নেট নিউট্রালিটি বা নেট নিরপেক্ষতার ধারণা দিয়েছিলেন।

প্রযুক্তি নিয়ে এরকম ভয় পেয়ে যাওয়ার ঘটনাগুলোকে সাধারণত আমি সংশয়ের চোখে দেখি। তবে চ্যাটজিপিটি ব্যবহার করে ন্যূনতম কোডিং দক্ষতা সম্পন্ন যে কেউ ভুয়া স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের নেটওয়ার্ক বানিয়ে ফেলতে পারে। যেগুলোতে বিশ্বাস করার মতো, কিন্তু আসলে মিথ্যা সংবাদ, কর্মী ও সম্পাদকীয় নীতির কথা বলা থাকবে।

আমার সহকর্মী সেথ স্মলি-র মতে,  

“এই প্রযুক্তি মূলত ইন্টারনেটে থাকা বিপুল পরিমাণ তথ্য প্রক্রিয়াজাত করার মাধ্যমে কাজ করে। এরপর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কাজে লাগিয়ে ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুযায়ী নতুন কন্টেন্ট তৈরি করে। ব্যবহারকারীরা এটিকে যেকোনো ধরনের লিখিত কন্টেন্ট তৈরি করতে বলতে পারেন।”

রাজনৈতিক কর্মী, লবিস্ট ও বিজ্ঞাপনী মুনাফা-সন্ধানী প্রতারকেরা এমন কিছু সন্দেহজনক নিউজ সাইট তুলনামূলক কম সময়ে তৈরি করছে – যেগুলো “পিংক স্লাইম” নামে পরিচিত – চ্যাটজিপিটির মতো কোনো এআই টুল ব্যবহার না করেই। কলাম্বিয়া জার্নালিজম স্কুলের টো সেন্টারের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো প্রিয়াঞ্জনা বেনগানি পিংক স্লাইম নেটওয়ার্ক নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করছেন। প্রিয়াঞ্জনা বলেন, “অনেকে এই কাজের জন্য ফিলিপাইনে ঠিকাদার ভাড়া করছে, অনেকে আবার অ্যালগরিদম ব্যবহার করে সরকারি ডেটাবেজগুলোর ভিত্তিতে হাজার হাজার আর্টিকেল তৈরি করছে।”

“এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে বাধাগুলো কী ক্রমেই কমে আসছে? উত্তর হলো হ্যাঁ,” বলেছেন বেনগানি। “আজকাল যেকেউ যেকোনো জায়গা থেকে এরকম কৃত্রিম খবর তৈরি ও প্রচার করতে পারে।”

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তৈরি সানকোস্ট সেন্টিনেলের “রিপোর্টারদের” ছবি। (অ্যালেক্স মহাদেবন/পয়েন্টার)

অন্যান্য নানা কাজের ফাঁকে, আমি দুই মিনিটের মধ্যে আরেকটি এআই টুল দিসপারসনডাজনটএক্সিস্ট.কম ব্যবহার করে মার্টিনেজ, প্রধান সম্পাদক সারাহ জনসন, কপি এডিটর সারাহ নুয়েন, ফটোগ্রাফার জেনিফার ডেভিস ও অন্যান্যদের মুখের ছবি তৈরি করে ফেলেছি।

সানকোস্ট সেন্টিনেলের জন্য একটি স্লোগান ঠিক করতে গিয়ে চ্যাটজিপিটি প্রথমে বলেছিল, “শাইনিং আ লাইট অন সেইন্ট পিটার্সবুর্গ।” আমি যখন এটিকে আরেকটু মজাদার করতে বলি, তখন এটি বলে, “আনকভারিং দ্য স্টোরিজ দ্যাট ম্যাটার ইন সেইন্ট পিটার্সবার্গ” ।

একই সঙ্গে চ্যাটজিপিটি আমাকে সম্পাদকীয় ও সংশোধন সম্পর্কিত নীতিমালা, সম্পাদক বরাবর কিছু চিঠি, এমনকি একটি অস্তিত্বহীন স্থানীয় আর্ট গ্যালারি সম্পর্কে সম্পূর্ণ বানোয়াট খবর লিখে দেয়। এটি বিজনেসবুস্ট নামে একটি ভুয়া অ্যাপের খবরও তৈরি করে, যেটি বানিয়েছেন সেইন্ট পিটার্সবুর্গের ভুয়া স্থানীয় উদ্যোক্তারা।

স্থানীয় নির্বাচনে সরকারি কর্মকর্তাদের কারচুপি নিয়েও এটি একটি ভুয়া আর্টিকেল তৈরি করে। পাশাপাশি শহরের মেয়রকে নিয়েও একটি আর্টিকেল ছাপানো হয়। সেখানে মেয়রের বিরুদ্ধে শহরের উন্নয়ন প্রকল্পে টেন্ডার নিলাম না করার অভিযোগ আনা হয়।

এমনকি আমি চ্যাটজিপিটিকে এই ভুয়া পত্রিকার হোম পেইজ তৈরির জন্য এইচটিএমএল কোডও লিখতে বলি, যা সে খুব সহজেই করে দিতে সক্ষম হয়। চ্যাটজিপিটি আমাকে আরও জটিল জাভাস্ক্রিপ্ট কোড যুক্ত করার জায়গাগুলোও দেখিয়ে দেয়, যা ভুয়া সাইটটিকে আরও “আকর্ষণীয় ও ইন্টারঅ্যাকটিভ” করে তুলবে।

সানকোস্ট সেন্টিনেল ওয়েবসাইটের জন্য এইচটিএমএল কোড তৈরি করছে চ্যাটজিপিটি। (অ্যালেক্স মহাদেবন/পয়েন্টার)

এমন নয় যে চ্যাটজিপিটির আউটপুট সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত ছিল। মেয়রকে নিয়ে প্রকাশিত আর্টিকেলে দুইবার মেয়রের নাম ভুল লেখা হয়েছে। তাছাড়া চ্যাটজিপিটি খুবই একঘেঁয়ে সব কপি লেখে, যেমনটি দেখেছেন মার্টিনেজের পরিচয়ের ক্ষেত্রে।

প্রিয়ঞ্জনা বেনগানি বলেন, “আমার মনে হয় না চ্যাটজিপিটি রাতারাতি নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠবে।” এই প্রসঙ্গে তিনি দুই বছর আগে ডিপফেইক ও গত বছর ডাল-ই এর আবির্ভাব নিয়ে মিডিয়ার হৈ-হুল্লোরকে অযথা বলে ইঙ্গিত দেন। আমরা এখনো এগুলোর মাধ্যমে তেমন কোনো প্রভাব তৈরির মতো মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর ঘটনা দেখিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদমির জেলেনেস্কির একটি ডিপফেক ভিডিও-র সত্যতা দ্রুতই উদঘাটন করা হয়েছিল

চ্যাটজিপিটি মডেলটি রিয়েল-টাইম আপডেট রাখে না। এছাড়াও এটি কোনো ঘটনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত বিবরণ দেয় না, যার উপর ভিত্তি করে ঘটনার শিকার স্থানীয়রা অনুসন্ধান করতে পারে। (উদাহারণস্বরূপ, মেয়রকে নিয়ে করা চ্যাটজিপিটির প্রতিবেদনটিতে সেই উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যয়ের বা তার আকার সম্পর্কে কোনো তথ্য ছিল না।)

এবার আমার তৈরি করা সেই ভুয়া অর্থবাণিজ্য সংক্রান্ত খবরটিতে ফেরা যাক। আপনি এখানে চ্যাটজিপিটির ফাঁকফোকড়গুলো দেখতে পাবেন। এগুলো দেখে সম্পাদকেরা বিরক্ত হবেন বা মাথার চুল ছিঁড়বেন। “প্রতিবেদনটির” একটি অনুচ্ছেদ এমন:

“সেইন্ট পিটার্সবুর্গের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের নানা প্রতিকূলতা দেখে এই অ্যাপ তৈরির অনুপ্রেরণা পেয়েছেন কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা, দুই ভাই টম ও জেরি লি। তারা এমন একটি সাশ্রয়ী ও সহজে ব্যবহারযোগ্য অ্যাপের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন যা ব্যবসায়ীদের বর্তমান যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে সাহায্য করবে।

টম লি বলেন, “ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আমাদের স্থানীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড। আমরা এমন কিছু তৈরি করতে চাচ্ছিলাম যা তাদের ব্যবসায় সাহায্য করবে। আর বিজনেসবুস্ট ঠিক এই কাজটিই করে থাকে।”

সানকোস্ট সেন্টিনেল ওয়েবসাইটের জন্য একটি অর্থবাণিজ্য সংক্রান্ত আর্টিকেল তৈরি করছে চ্যাটজিপিটি। (অ্যালেক্স মহাদেবন/পয়েন্টার)

এটি পড়লে মনে হয়, শিক্ষানবিশ কেউ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের কিছু পাতায় চোখ বুলিয়ে পরবর্তীতে কিছু ভুয়া নামধাম যোগ করে লেখাটি তৈরি করেছে, যেখানে ব্যবসাটি খুবই হাস্যকর ও অবাস্তব শোনাচ্ছে। কিন্তু চ্যাটজিপিটি তো এভাবেই কাজ করে, তাই না?

চ্যাটজিপিটির ভুয়া তথ্য ছড়ানো এবং অন্যান্য অপব্যবহার মোকাবিলার জন্য, ওপেন এআই, এরই মধ্যে চালু করেছে “ক্লাসিফায়ার” নামের একটি টুল, যেটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি করা টেক্সট সনাক্ত করতে পারবে। আমার চলমান এই পরীক্ষা থেকে কিছু টেক্সট এখানে ইনপুট দেওয়ার পর আমি হেসে উঠি। এটি বলেছে,

“সম্ভবত লেখাটি এআই টুলের সাহায্যে তৈরি করা হয়েছে।”

আচ্ছা।

পয়েন্টার-এর ডিজিটাল মিডিয়া স্বাক্ষরতার উদ্যোগ, মিডিয়া ওয়াইজের পরিচালক হওয়ার সুবাদে আমি জানি যে, অধিকাংশ পাঠকই কোনো সংবাদ সাইটকে এর চেহারা, বাইলাইন ও ওয়েব ডিজাইনের ভিত্তিতে বিচার করে থাকে।

নিকট অতীতে এটি আংশিক-নির্ভরযোগ্য একটি উপায় হয়ে থাকলেও চ্যাটজিপিটির সহায়তায় খুব সহজেই একটি ভুয়া কিন্তু আকর্ষণীয় একটি সংবাদ ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, যা উপরের সকল শর্ত পূরণ করবে।

“অতীতে ব্যক্তির ছবি বা প্রতিবেদকের নামযুক্ত মানসম্মত একটি লেখা ও সাজানো-গোছানো একটি প্রতিবেদনের আলাদা কদর ছিল,“ এক টুইটার মেসেজে বলেছেন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর অ্যান ইনফর্মড পাবলিকের গবেষক ও বিজ্ঞানী মাইক কলফিল্ড। সেখানে তিনি মিডিয়া লিটারেসি সংক্রান্ত কৌশল পড়িয়ে থাকেন। “এগুলো থাকলেই যে সেটি নির্ভরযোগ্য হবে— এমন নয়। কিন্তু তখন অন্তত কোনো কিছু মানসম্পন্ন মনে হচ্ছে— এমন জিনিস এবং পরিচিত বা ‘সত্যিকারের’ জিনিসগুলোর মধ্যে সামঞ্জস্য ছিল। মানসম্পন্ন জিনিসগুলোর সঙ্গে সম্পৃক্ত বিষয়গুলো ব্যয়বহুল ছিল। সেগুলো এই ক্ষেত্রে ঢোকার জন্য কিছু বাধাবিপত্তি তৈরি করত।”

কলফিল্ড বলেন, যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে অসংখ্য স্কুলে শিক্ষকেরা ত্রুটিযুক্ত ওয়েবসাইটগুলো শনাক্ত করতে এখনো সেকেলে পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। স্ট্যানফোর্ড হিস্ট্রি এডুকেশন গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা স্যাম ওয়াইনবার্গের সঙ্গে মিলে লেখা কলফিল্ডের একটি বই দ্রুত প্রকাশিত হবে, যেখানে এই বিষয়ে একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তৈরি করা ভুয়া সংবাদমাধ্যম সনাক্তের ক্ষেত্রে এই পদ্ধতিগুলো বেশিরভাগই অকার্যকর।

“গত ৩০ বছরে যা ঘটেছে, তা হলো আগে যেসব সিগন্যাল ব্যয়বহুল ছিল, যেগুলো দৃশ্যমান অবস্থায় দেখা যেত, সেগুলো এখন খুবই সহজলভ্য হয়ে উঠেছে,” বলেন কলফিল্ড। “তা সত্ত্বেও, আমরা শিক্ষার্থীদের এখনো সেসব অতীত সিগন্যালের ব্যাপারেই শিখিয়ে যাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমরা মূলত একটি বড়সড় বিপর্যয় তৈরি করছি।”

পাশাপাশি একাধিক উৎস থেকে কোনো খবর বা তথ্য পড়া মিডিয়া স্বাক্ষরতার একটি মৌলিক কৌশল। এসএইচইজি-এর তৈরি এই কৌশল মিডিয়া ওয়াইজের মাধ্যমে পাঠকদের শেখানো হয়ে থাকে। এই পদ্ধতি ব্যবহারকারীদেরকে শুধুমাত্র ওয়েবসাইটের কর্ণধারদের নাম বা “about us” এর ওপর নির্ভর না করে সার্চ ইঞ্জিনের সহায়তায় অন্যান্য উৎস থেকে পড়তেও পরামর্শ দেয় ও উদ্বুদ্ধ করে থাকে, যাতে করে সংশ্লিষ্ট তথ্য বা খবর সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যায়।

সম্ভাব্য কোনো পিংক স্লাইম ওয়েবসাইট থেকে টেক্সট কপি করে গুগলে সার্চ করার মাধ্যমে, সেটি কোনো জায়গা থেকে কপি করা কিনা—তা যাচাইয়ের পরামর্শ দিয়েছেন বেনগানি। এটি এই ধরনের নেটওয়ার্ক শনাক্তের ক্ষেত্রে একটি বড় সতর্কতা চিহ্ন।

ওপেনএআই মন্তব্য প্রদানের অনুরোধে সাড়া দেয়নি। কিন্তু আমি যখন চ্যাটজিপিটিকে জিজ্ঞাসা করেছি যে তার মতো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কীভাবে তথ্যপ্রবাহে প্রভাব ফেলতে পারে, তখন তার জবাব:

“কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মাধ্যমে তৈরি কন্টেন্ট সহজেই ভুল তথ্য ছড়াতে পারে, বিশেষ করে যদি তা ফ্যাক্ট-চেক না করা হয় বা পক্ষপাতমূলক ও ভুল ডেটার ওপর ভিত্তি করে লেখা হয়। এছাড়াও এআই টুল খুব সহজেই বিপুল পরিমাণ কন্টেন্ট বা ডেটা তৈরি করতে পারে। যার ফলে ব্যবহারকারীদের জন্য সূত্রের সত্যতা যাচাই কঠিন হয়ে পড়ে। এমন পরিস্থিতি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের প্রচার সহজ করে তুলতে পারে, যা সাংবাদিকতা ও সামগ্রিকভাবে তথ্য ব্যবস্থার ওপর মানুষের বিশ্বাস অনেকাংশে কমিয়ে আনবে।

আমি মনে করি, এআই টুলগুলো ব্যবহারে আরও দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। অর্থাৎ, সকল নৈতিক নীতিমালা মেনে প্রতিবেদন বা তথ্য সরবরাহ করা উচিত। পাশাপাশি যথাযথ উৎসের ও বিষয়ের গোপনীয়তাও রক্ষা করে চলা উচিত। এছাড়াও, সংবাদ মাধ্যমগুলোকে খবর বা সংবাদ প্রকাশ করার আগে ফ্যাক্টচেকের মাধ্যমে যাচাই করে নেয়া উচিত যে, এটি এআই ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে কি না।”

সাংবাদিকতার সাথে চ্যাটজিপিটির এই জটিল সম্পর্ক কেবল ভুয়া তথ্য ছড়ানো ওয়েবসাইট শনাক্ত করেই শেষ হয় না। বিশ্বস্ত সংবাদ মাধ্যমগুলোও এআই-এর সঙ্গে তালগোল পাকিয়ে ভুল খবর প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি সিনেটকে এমন করতে দেখা গেছে। পাশাপাশি বাজফিড বলছে, তারা চ্যাটজিপিটি ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে “নতুন ধরনের কন্টেন্ট” তৈরি করবে।

বেনগানি বলেন, “আমি মনে করি সমস্যাটি শুধুমাত্র ভুয়া খবর ছড়ানো ওয়েবসাইট বা পিংক স্লাইম-এর সঙ্গে জড়িতদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না।”


এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল পয়েন্টার-এ। অনুমতি নিয়ে এখানে অনুবাদ ও পুনঃপ্রকাশ করা হয়েছে। বাংলায় অনুবাদ করেছেন মাহমুদুল রিফাত।

আরো কিছু লেখা