মিনহাজ আমান
ছবির এই নারী কোনো লাভ জিহাদের শিকার নন
মিনহাজ আমান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত কয়েক বছর ধরেই এসিডদগ্ধ এক নারীর ছবি পোস্ট করে দাবি করা হচ্ছে যে, তিনি লাভ জিহাদের শিকার এবং তিনি এই নিপীড়নের শিকার হয়েছেন মুসলিম স্বামীর হাতে। এবছরের শুরুতে এই দাবিতে বাংলায় (১, ২, ৩) এবং সম্প্রতি হিন্দিতে নতুন করে কিছু পোস্ট ছড়িয়েছে। তবে ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায়, ছবিটির নারীর নাম রেশম খান এবং তিনি কোনো লাভ জিহাদের শিকার নন।
সার্চ করে দেখা গেছে, সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট ছড়াচ্ছে ২০২০ (১, ২, ৩) সাল থেকে। যেখানে দাবি করা হচ্ছে, এসিডে ঝলসে যাওয়া নারীর নাম প্রীতি সিং। তিনি রাজস্থানে জন্ম নেয়া একজন মডেল এবং পরবর্তীতে সাদ্দাম হোসেন নামের একজন মুসলিমকে বিয়ে করে ‘আয়েশা’ নাম ধারণ করেন। দাম্পত্য কলহের জের ধরে প্রীতির উপর এসিড নিক্ষেপ করেন তাঁর স্বামী। ২০২২ সালেও একই ধরনের পোষ্ট পাওয়া যায় ফেসবুক (১, ২, ৩) ও টুইটারে।
ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখা যায়, এই নারীর পাশাপাশি দুইটি ছবির একটি কোলাজ প্রথম প্রকাশ করেছিল ইন্ডিয়া টাইমস, ২০১৭ সালের জুলাই মাসে। যার ক্যাপশনে বলা হয়েছে, “২১ বছর বয়সী মডেল রেশম খান এবং তার ভাই জামিল মুখতার একজন শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তির আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তাদের ওপর এসিড নিক্ষেপ করা হয়েছিল।”
আরো সার্চ করে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত খবর পাওয়া যায় ইনসাইডার ডটকমে। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সে বছরের ২১ জুন লন্ডনে রেশম খান ও তার ভাইয়ের উপর এই হামলার ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ এ ঘটনায় জন টামলিন নামে লন্ডনের একজন বাসিন্দাকে গ্রেফতারও করেছিল। এছাড়া গার্ডিয়ানের খবর মারফত জানা যায়, পুলিশ এ ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করার পর গ্রেফতার করা হয়েছিল এসিড নিক্ষেপকারী টামলিনকে। প্রথমে পুলিশ ঘটনাটির সঙ্গে কোনো ধর্মীয় বা জাতিগত বিদ্বেষের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করলেও পরবর্তীতে প্রমানের ভিত্তিতে তারা এই আক্রমণকে ‘হেইট ক্রাইমের’ ঘটনা বলে জানায়।
এছাড়া ভারতের সামাজিক মাধ্যমেও একই নারীর ভিন্ন ছবি পোস্ট করে প্রচার করা হয়েছিল যে, তিনি লাভ জিহাদের শিকার। এবং এটির সত্যতা যাচাই করেছিল সেখানকার ফ্যাক্টচেকিং সংস্থাগুলো।