তৌহিদুল ইসলাম রাসো

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
খাগড়াছড়িতে কোনো বাস দুর্ঘটনা ঘটেনি, ছবিগুলো ভারতের
This article is more than 4 months old

খাগড়াছড়িতে কোনো বাস দুর্ঘটনা ঘটেনি, ছবিগুলো ভারতের

তৌহিদুল ইসলাম রাসো

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে বাস দুর্ঘটনার একটি কোলাজ করা ছবি ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। একই ঘটনার কয়েকটি ছবি একসঙ্গে যুক্ত করে ফেসবুক পোস্টের বিবরণে বলা হচ্ছে দুর্ঘটনার এই ঘটনাটি ঘটেছে খাগড়াছড়ি জেলার আলুটিলায়। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে বাস দুর্ঘটনার এই ঘটনাটি বাংলাদেশের নয় বরং ভারতের। প্রতিবেশী দেশটির উত্তরাখণ্ডে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া খাগড়াছড়িতে এমন কিছু ঘটেনি বলে জানিয়েছে স্থানীয় এক সাংবাদিকও।

ফেসবুকে একাধিক ব্যক্তিগত প্রোফাইল (, ), পেজ (, ) ও গ্রুপ থেকে কোলাজ করা ছবিটি শেয়ার করে বিবরণীতে বলা হচ্ছে, “খাগড়াছড়ি, আলুটিলায় ভয়াবহ এক  বাস দুর্ঘটনা,খাদে বাস উল্টে শিশু সহ মৃত্যু ২০ জনের। বাসে প্রায় ৪৫ জন যাত্রী ছিল। মৃত্যুর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।” কিছু পোস্টের (, ) বিবরণীতে উক্ত দুর্ঘটনায় কারও আত্মীয় আছে কি না মর্মে শেয়ার করার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

এছাড়া ভুয়া দাবিতে ঘটনাটি খাগড়াছড়ির বলে সেখানকার স্থানীয় সংবাদমাধ্যম দাবি করা একটি ফেসবুক পেজেও শেয়ার করা হয়েছে। 

আলোচিত ঘটনাটি বাংলাদেশের কি না তা যাচাইয়ে অনলাইনে রিভার্স ইমেজ সার্চ করে দেখে ডিসমিসল্যাব। উক্ত সার্চে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির একটি অনলাইন প্রতিবেদন খুঁজে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে যে ছবি ব্যবহার করা হয় তার সঙ্গে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবির হুবহু মিল পাওয়া যায়। আর সেখানে ঘটনাটি ভারতের বলে উল্লেখ করা হয়। বলা হয় ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের একটি বাস খাদে পড়লে মর্মান্তিক এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি সম্পর্কে আরও নিশ্চিত হতে ভারতীয় গণমাধ্যমে এ সম্পর্কে খোঁজ করা হয়। সেখানে একই ঘটনার এবং একই ছবিতে একাধিক (, ) ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন প্রকাশিত হতে দেখা যায়। হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয় গত ৪ নভেম্বর সকালে উত্তরাখণ্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে। সক্ষমতার চেয়ে বেশি যাত্রী বহন করা বাসটি বাঁক থেকে সরে গিয়ে ২০০ মিটার গভীর খাদে পড়ে যায়। আর এতে ৩৬ জন নিহত এবং ২৭ জন আহত হন। 

এছাড়া বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে এমন দুর্ঘটনা ঘটেনি বলে ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি নিশ্চিত করেছেন ডিসমিসল্যাবকে। এর বাইরে বাংলাদেশের জাতীয় বা স্থানীয় গণমাধ্যমে খোঁজ করেও এমন কোনো খবরের হদিস পাওয়া যায়নি। 

তাই বলা যায়, বাংলাদেশের খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া দুর্ঘটনার বলে যে দাবিটি ছড়িয়েছে তা ভুয়া এবং ব্যবহৃত ছবিগুলো ভারতের। 

আরো কিছু লেখা