ফাতেমা তাবাসুম

ফেলো, ডিসমিসল্যাব
ভারতের ঘটনাকে বাংলাদেশে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দাবিতে প্রচার

ভারতের ঘটনাকে বাংলাদেশে ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের দাবিতে প্রচার

ফাতেমা তাবাসুম

ফেলো, ডিসমিসল্যাব

ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সম্প্রতি এক নারীর মরদেহের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। দাবি করা হচ্ছে, এই নারী বাংলাদেশি, যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। তবে যাচাইয়ে দেখা যায় দাবিটি সত্য নয়। মূল ঘটনাটি ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের।

ফেসবুকে সম্প্রতি বেশকিছু প্রোফাইল (, , ), পেজ (, ) ও গ্রুপ থেকে এক নারীর মরদেহের ছবি পোস্ট করা হয়েছে। পোস্টগুলোতে দাবি করা হয়, এটি বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা। “মুক্তিবার্তা” নামের একটি ফেসবুক পেজ থেকে নারীর তিনটি ছবি পোস্ট করে বলা হয়, “আদিবাকে পাওয়া গেছে, কিন্তু লাশ হয়ে। নিখোঁজের একদিন পর কাদামাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া গেছে। সে চাঁদপুর জেলার মতলব উপজেলার বাসিন্দা।” পোস্টটিতে #BangladeshCrisis, #ComeBackSheikhHasina, এবং #StepDownYounus–এর মতো হ্যাশট্যাগগুলো ব্যবহার করা হয়েছে। একই ছবি ভিন্ন ক্যাপশন যোগেও কয়েকটি প্রোফাইল (, ) থেকেও পোস্ট করা হয়েছে। এর মধ্যে কাজি রাকিব নামের একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী গত ২৩ জানুয়ারি তার করা পোস্টের মন্তব্য অংশে দাবি করেছেন, “ঘটনাটি আজ সকালে রংপুরের। ভালোবাসার মানুষটার সাথে দেখাই করতেই গেছিলো, ভালোবাসার মানুষটা সহ ও বেশ কয়েকজন মিলে ধ*র্ষ*ণ করে মেরে ফেলে যায়।” 

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলো নিয়ে রিভার্স ইমেজ অনুসন্ধানে ডিসমিসল্যাব ভারতীয় তথ্য যাচাইকারী সংস্থা ফ্যাক্টলির একটি সাম্প্রতিক ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন খুঁজে পায়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, একই ছবি ব্যবহার করে সম্প্রতি ভারতেও গুজব ছড়ায়। ভারতে সামাজিক মাধ্যম এক্সে এই ছবিগুলো ব্যবহার করে একাধিক ব্যবহারকারী দাবি করে ঘটনাটি রাজস্থানের। আরও দাবি করা হয়, এ ঘটনায় আবিদ নামে এক মুসলিম ব্যক্তি তার স্ত্রী নীলামকে খুন করে স্যুটকেসে ভরে খালে ফেলে দিয়েছেন।

তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, মূল ঘটনা ভারতের পাঞ্জাবের চণ্ডীগড়ের। বিমান বালার প্রশিক্ষণরত ২২ বছর বয়সী এক তরুণী, নিশা সোনিকে হত্যার ঘটনাটি ঘটে গত ২৩ জানুয়ারি। নিশা হিমাচল প্রদেশের মান্ডি জেলার সেরু গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, নিশার সঙ্গে যুবরাজ সিং(৩৩) নামে এক পুলিশ কর্মকর্তার বন্ধুত্ব ছিল। পরে পাটিয়ালার ভাকরা খালের পাসিয়ানা ব্রিজের নিকট থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে ।

ফ্যাক্টলি একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যম, যেমন দৈনিক ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, দৈনিক ভাস্করলাইভমিন্ট-এর প্রতিবেদন যাচাই করে নিশ্চিত করে যে মূল ঘটনাটি ভারতে ঘটেছে, এছাড়াও অভিযুক্ত যুবরাজ সিং ও খুনের শিকার নিশা সোনি দুজনেই অমুসলিম এবং পাঞ্জাবি।

আরো কিছু লেখা