জাইমা রহমানের নামে ছড়ানো ভিডিওটি অন্তত ৯ বছরের পুরোনো
সম্প্রতি বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় এক নারীর নাচের ভিডিও দিয়ে দাবি করা হচ্ছে, তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান। ভিডিওটি একাধিক ফেসবুক পেজ ও প্রোফাইল থেকে পোস্ট ও রিল (১, ২, ৩, ৪, ৫) আকারে আপলোড করা হয়েছে। এছাড়াও ইউটিউবের একাধিক চ্যানেলে (১, ২, ৩, ৪) একই ভিডিও আপলোড করে দাবি করা হয়েছে, সেটি জাইমা রহমানের নাচের দৃশ্য।
তবে ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা গেছে, ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অন্তত নয় বছর আগে থেকেই বিভিন্ন ব্যক্তির নামে প্রচারিত হয়ে আসছে। জাইমা রহমানের আগেও ভিন্ন দেশের দুজন ব্যক্তির নামে ভিডিওটি ছড়াতে দেখা গেছে।
ভিডিওটির প্রকৃত সোর্স খুঁজতে গিয়ে নয় বছর আগে ইউটিউবে আপলোড করা একটি ভিডিওর সন্ধান পাওয়া যায়। মুজরা অন কামলি কামলি শিরোনামে ২০১৪ সালের ৭ই মে এফ আরএ নামের একটি চ্যানেল থেকে ভিডিওটি আপলোড করা হয়।
আল সায়েদ ম্যারেজ ব্যুরো নামের আরেকটি পেজ থেকে ২০১৪ সালের ২৮ নভেম্বর কামলি পাকিস্তানি ডান্স নামে একই ভিডিও আপলোড হতে দেখা যায়। অর্থাৎ, ভিডিওটি পাকিস্তানের মুজরা নাচের ভিডিও বলে দাবি করা হচ্ছে।
মুজরা মূলত মোগল ঐতিহ্যবাহী নৃত্য হলেও দক্ষিণ এশিয়ায় বর্তমানে পাকিস্তানে আধুনিক মুজরা নৃত্যশিল্পীরা বিয়ে, জন্মদিন ও ব্যাচেলর পার্টির মতো বিভিন্ন আয়োজনে নাচ পরিবেশন করে থাকেন।
এছাড়াও ২০১৭ সালে কামলি ডান্স লিক ভিডিও এবং ২০২০ সালে হট কাভার ডান্স শিরোনামে ইউটিউবে একই ভিডিও পাওয়া যায়। ডেইলি মোশনেও কামলি কামলি, কামলি পাকিস্তানি ডান্স শিরোনামে আলাদা আলাদা ভিডিও পাওয়া যায়।
এর বাইরে দুই পাকিস্তানি অভিনেত্রী কুবরা খান ও মেহভিশ হায়াতের নামেও ইউটিউব, টুইটার ও ডেইলি মোশনে বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন ভিন্ন শিরোনামে ভিডিওটি ছড়ায়।
কুবরা খানের নামে চলতি বছরের জানুয়ারিতে ইউটিউব (১, ২) ও টুইটারে ভিডিওটি প্রচারিত হয়।
একই সময় সেলিব্রিটি ভাইবস নামের একটি ইউটিউব চ্যানেলেও এটি আপলোড করা হয় মেহভিশ হায়াতের নাচের ভিডিও দাবি করে। সেখানে বলা হয়েছিল, এটি পাকিস্তানের এক সাবেক সেনা কর্মকর্তা কামার জাভেদ বাজোয়ার বাড়ির ঘরোয়া পরিবেশে মেহভিশ হায়াতের নাচের ভিডিও।
অর্থাৎ, ৯ বছর আগে থেকে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি পাকিস্তানের মুজরা নাচের ভিডিও বলে প্রচারিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি একাধিক নারীর নাম উল্লেখ করে ভিডিওটি প্রচারিত হলেও কোথাও ভিডিওর নারীর প্রকৃত পরিচয় পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কুবরা খান ও মেহভিশ হায়াতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।