আহমেদ ইয়াসীর আবরার
ভিন্ন ঘটনার ভিডিওকে জামায়াতের সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ হিসেবে প্রচার
আহমেদ ইয়াসীর আবরার
“আর্মি ভার্সেস জামাত টি২০” ক্যাপশনসহ একটি ভিডিও প্রচারিত হতে দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। ভিডিওটির কমেন্ট পর্যালোচনা করে দেখা যায় এটিকে অনেকে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ ভেবে বিভ্রান্ত হচ্ছে। ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায়, এটি কোনো রাজনৈতিক দলের সদস্যদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনির সংঘর্ষের ভিডিও নয়। ঘটনার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন।
“আর্মি ভার্সেস জামাত” ক্যাপশন এবং যমুনা টিভির লোগো যুক্ত ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে বিভিন্ন পেজ এবং গ্রুপে (১, ২, ৩, ৪)। একই ক্যাপশনযুক্ত সবচেয়ে পুরোনো যে ভিডিওটি পাওয়া যায় “শেখ হাসিনা” নামক একটি পেজে, যা পোস্ট করা হয় ২৪ অক্টোবর তারিখে। ভিডিও রিলটি এখন পর্যন্ত সাত হাজারেরও বেশি শেয়ার হয়েছে এবং ২৫০০টিরও বেশি মন্তব্য দেখা যাচ্ছে। মন্তব্যের ঘরে বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করতে দেখা যাচ্ছে। একজন ব্যবহাকারী লিখেছেন, “জামাত-শিবিরের অত্যাচারে এখন সবাই অতিষ্ঠ।” এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবহারকারীকে “জামাত শিবিরের আসল রুপ”, “একাত্তরের চেতনা বিরোধী রাজাকার আল বদরদের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে কঠোর হস্তে বাংলা করতে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধুর।” ইত্যাদি কমেন্ট করতে দেখা যায়। কোন কোন ব্যবহারকারী এটিকে জামায়াতে ইসলামির সাথে সংশ্লিষ্ট ঘটনা না বলেও মন্তব্য করেছেন।
ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায় এটি মূলত নাটোরে মারকাজ মসজিদের দখল নিয়ে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ ও জুবায়ের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময়ের ভিডিও। গত ২৪ অক্টোবরে নাটোরের মল্লিকহাটি এলাকায় তাবলিগ জামাতের জেলা মারকাজ মসজিদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংগঠনটির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থল নিয়ন্ত্রণে নেয়। এই ঘটনা নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশি গণমাধ্যম যমুনা টিভি। ২৪ অক্টোবরে যমুনা টিভির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে এই ভিডিও প্রতিবেদনটি পোস্ট করা হয়। পরবর্তীতে এই ভিডিওর ভেতরে “আর্মি ভার্সেস জামাত” ক্যাপশন যুক্ত করে প্রচার করা হয় যা বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।
প্রসঙ্গত ২০১৮ সালে তাবলিগ জামাতের সংস্কার প্রশ্নে বিভক্ত হয়ে পড়ে এবং তা পরবর্তীতে সহিংসতায় রূপ নেয়। বিভক্তির পর থেকে মাওলানা জুবায়ের আহমদের নেতৃত্বে একটি গ্রুপ এবং মাওলানা মোহাম্মদ সাদ কান্দলভীর অনুসারীরা ভিন্ন গ্রুপ হয়ে দুই পর্বে পৃথকভাবে বিশ্ব ইজতেমা পালন করে আসছে।