আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
হেযবুত তওহীদের এমাম দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতার পুরোনো ছবি প্রচার

হেযবুত তওহীদের এমাম দাবিতে আওয়ামী লীগের নেতার পুরোনো ছবি প্রচার

আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

সামাজিক মাধ্যমে তিনটি সম্পাদিত ছবি প্রচার করে দাবি করা হচ্ছে সেগুলো হেযবুত তাওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে এক ব্যক্তি কয়েকজন নারীর সঙ্গে সোফায় বসে আছেন। ছবিগুলোর ওপরে যুক্ত করা হয়েছে হেযবুত তাওহীদের এমাম সেলিমের ছবি।  তবে যাচাইয়ে দেখা যায় ছবিগুলোর সঙ্গে হেযবুত তওহীদের এমামের কোনো সম্পর্ক নেই। সোফায় বসে থাকা ব্যক্তিটি আসলে আওয়ামী লীগের একজন প্রয়াত নেতা আর আলাদা করে যুক্ত করা ছবিতে থাকা ব্যক্তি হলেন হেযবুত তওহীদের এমাম সেলিম। অর্থাৎ তাদের পরিচয় আলাদা হলেও ছবিগুলো একই ব্যক্তি বলে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে।

ফেসবুকের একাধিক পোস্টে (, , , ) তিনটি ছবির কোলাজ করে এমন দাবি করা হচ্ছে। বিবরণীতে বলা হচ্ছে – “যমুনা টেলিভিশন কে ধন্যবাদ। ভন্ডের মুখোশ খুলে দেয়ান জন্য।”। কোলাজ করা তিনটি ছবির সঙ্গেই নিষিদ্ধ সংগঠন হেযবুত তওহীদের এমাম হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের ছবি যুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বিশ্লেষণে দেখা যায়– ছবি তিনটির একটিতে এক ব্যক্তি শার্ট পরিহিত অবস্থায় এবং অন্য দুটিতে একই ব্যক্তি খালি গায়ে দুইজন নারীর সঙ্গে একটি সোফায় বসে আছেন। পোস্টের মন্তব্যে দেখা গেছে ব্যবহারকারীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ এটিকে সত্য মনে করে তাকে আইনের আওতায় আনা এবং বিচারের দাবিও করেছেন। আবার কেউ কেউ এটিকে ভুয়া এবং বানোয়াট বলেও দাবি করেছেন।

ছবিগুলো যাচাই করতে গিয়ে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে গণমাধ্যমের একাধিক প্রতিবেদন। কালবেলার প্রতিবেদনে সংযুক্ত ছবিতে ফেসবুক পোস্টের একটি ছবির হুবহু সাদৃশ্য পাওয়া যায়। ২০২৩ সালের ১৬ জুনে প্রকাশিত সেই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “দুই নারীর সঙ্গে আ.লীগ নেতার অশ্লীল ভিডিও ফাঁস”। একই ছবি দেখা যায় বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম-এর একটি প্রতিবেদনে। প্রতিবেদনে বলা হয়, ছবিগুলো ছিল পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ বেপারীর। এই ঘটনা নিয়ে সেসময় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় একাধিক জাতীয় (, ) ও স্থানীয় গণমাধ্যমে (, )। আরেকটি প্রতিবেদনে জানানো হয় পিরোজপুরের দীর্ঘা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আশুতোষ বেপারী ২০২৪ সালের ২৫ ডিসেম্বরে হৃদরোগের কারণে মারা যান

এ থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় যে সোফায় বসে থাকা ব্যক্তি একজন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা। তার সঙ্গে হেযবুত তওহীদের হোসাইন মোহাম্মদ সেলিমের কোন সম্পর্ক নেই। অর্থাৎ দুজন আলাদা ব্যক্তির ছবি একই ব্যক্তির বলে ভুলভাবে শেয়ার করা হচ্ছে ফেসবুকে, যা সঠিক নয়।

আরো কিছু লেখা