নোশিন তাবাসসুম

ফেলো, ডিসমিসল্যাব
যশোরের পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

যশোরের পুরোনো ঘটনাকে সাম্প্রতিক দাবিতে প্রচার

নোশিন তাবাসসুম

ফেলো, ডিসমিসল্যাব

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে চালের ড্রামের ভেতর থেকে এক শিশুর লাশ উদ্ধারের ভিডিও শেয়ার করে দাবি করা হচ্ছে লাশটি পাওয়া গেছে বিএনপির নেতার বাড়ি থেকে। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে, ভিডিওটি দুই বছরের বেশি পুরোনো। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মূল ঘটনাটি ২০২২ সালের ০২ অক্টোবরের; সেসময় যশোরে এক শিশু নিখোঁজের একদিন পর প্রতিবেশীর ঘরের চালের ড্রাম থেকে তার লাশ উদ্ধারের ঘটনা এটি। 

ফেসবুকের বেশ কয়েকজন ব্যবহারকারীকে (, , , , , , ) ২৫ আগস্ট থেকে একই দাবিতে ভিডিওটি শেয়ার করতে দেখা যায়। শেয়ার করা একটি ভিডিও পোস্ট বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেটি ৮ হাজারের বেশিবার দেখা হয়েছে এবং ২৬০ বারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে। বিবরণে লেখা, “অপহরণের পরে টাকা না দেওয়ায়, শিশুর লাশ পাওয়া গেলো বিএনপির নেতার বাড়িতে চালের ড্রামের ভিতরে। আর কত টাকা জন্য নিচে নামবে, বিএনপির লোকজন। টাকা লাগলে টাকা নে, আমার শিশুর জীবন ফিরিয়ে দে!” পোস্টটিতে “স্টেপডাউনফ্যাসিস্টইউনূস (#StepDownFescistYounus)” হ্যাশট্যাগও যুক্ত করা হয়েছে। এক মিনিটের ভিডিওতে দেখা যায়, হলুদ রঙের  টি-শার্ট পরা এক ব্যক্তি একটি ড্রাম থেকে চাল তুলছেন। ভিডিওটির ১৭ সেকেন্ড থেকে দেখা যায় পুলিশ লাল রঙের ওড়না পরিহিত এক নারীকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

ভিডিওটির সত্যতা যাচাইয়ে, কিফ্রেম ধরে সার্চ করলে দেখা যায় একই ভিডিও ২০২২ সালের ০৩ অক্টোবরে ফেসবুকের একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে আপলোড করা হয়েছিল। পোস্টের বিবরণে উল্লেখ করা হয়, “যশোরে চালের ড্রাম থেকে শিশুর মরা দেহ যেভাবে উদ্ধার হল! দেখলে চোখে পানি ধরে রাখতে পারবেন না। যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামের এক বাড়ির ঘরের মধ্য রাখা চালের ড্রাম থেকে সানজিদা নামের ৪ বছরের এক শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে যশোর জেলা ডিবি পুলিশ। এ ঘটনায় ওই বাড়ির মালিক আঞ্জুয়ারা বেগমকে আটক করা হয়েছে।” একই ভিডিও একাধিক ফেসবুক পেজ (, , , ), ও প্রোফাইল থেকে পোস্ট করা হয়। ওই দিনেই বেশকিছু ইউটিউব চ্যানেল (, , , , , , ) থেকেও ঘটনাটি নিয়ে ভিডিও প্রচার করা হয়।

আলোচিত ঘটনাটি নিয়ে সেসময় একাধিক সংবাদমাধ্যমে (, , , , , , ) প্রতিবেদন প্রকাশ হতে দেখা যায়। ২০২২ সালের ০২ অক্টোবরে প্রকাশিত প্রথম আলোর প্রতিবেদনে বলা হয়, নিহত সানজিদা যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামের সোহেল রানার মেয়ে। আপেল দেওয়ার কথা বলে প্রতিবেশী আঞ্জুয়ারা শিশুটিকে বসতঘরের ভেতরে ডেকে নিয়ে যান। পরের দিন আঞ্জুয়ারার ঘরের চালের ড্রাম থেকে সানজিদার লাশ উদ্ধার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। সেসময়ের আলোচিত এই ঘটনা নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে কোথাও নিহত শিশুটির পরিবারের রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা উল্লেখ করা হয়নি কিংবা মৃত্যুর পেছনে রাজনৈতিক বিবাদ থাকতে পারে বলেও জানানো হয়নি।

আরো কিছু লেখা