আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ছবিটি সম্পাদনা করা
This article is more than 2 months old

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ছবিটি সম্পাদনা করা

আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং আসিফ মাহমুদের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সম্পর্ক আছে দাবি করে একটি ছবি (, , , ) ছড়িয়েছে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে। সেখানে আন্দোলনরত কিছু মানুষের মধ্যে নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহকে দেখা যাচ্ছে। ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায় ছবিটি আসলে তোলা হয়েছিল ২০১৩ সালে, হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সময়। সেটি সম্পাদনা করে নাহিদ, আসিফ ও হাসনাতকে যুক্ত করা হয়েছে।

ফেসবুক পোস্টটিতে বলা হয় “প্রকাশ্যে শুধু শিবির সভাপতি আসেনি, বের হয়েছে প্রধান দুই সমন্বয়ক নাহিদ ও আসিফের হিযবুত তাহেরীর রাজনীতি।এরাই এতোদিন কোমলমতি সাধারণ ছাত্র সেজে ছিলো।” ২১ সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি হিসেবে প্রকাশ্যে আসেন সাদিক কায়েম নামের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবেও ভূমিকা পালন করেছেন। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির হলো বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন।

সাদিক কায়েমের ছাত্রশিবির সংশ্লিষ্টতা সামনে আসার পরপরই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অপর দুই সমন্বয়ক এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ও আসিফের সঙ্গে হিজবুত তাহরীরের সংশ্লিষ্টতা আছে দাবি করে ফেসবুকে এই সম্পাদিত ছবিটি ছড়ানো হয়েছে, যেখানে আরবী লেখাযুক্ত একটি কালো পতাকা দেখা যায়। ছবিটির সূত্র খুঁজতে গেলে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে ডেজেরেট নিউজের ২০১৩ সালের একটি প্রতিবেদন। ২০১৩ সালে ব্লাসফেমি আইন তৈরিসহ ১৩ দফা দাবিতে হেফাজতে ইসলাম যে আন্দোলন করেছিল, এই ছবিটি মূলত সেই আন্দোলনের। ছবিটি তুলেছেন ইসমাঈল ফেরদৌস। তিনি সেসময় মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের ফটোগ্রাফার হিসেবে কাজ করতেন। ডেজারেট নিউজের প্রতিবেদনেও তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। 

এছাড়াও ছবি বেচাকানার অনলাইন সাইট অ্যালামিতেও ছবিটি পাওয়া যায়। সেখানেও বলা হয়েছে যে, ছবিটি তুলেছেন ইসমাঈল ফেরদৌস এবং কন্ট্রিবিউটরে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের নাম দেয়া হয়েছে। ছবি তোলার তারিখ দেয়া হয়েছে ২০১৩ সালের ৪ মে।

মূল ছবিটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় ফেসবুক পোস্টে যে ছবিটি দেয়া হয়েছে তা মূলত সম্পাদিত। মূল ছবিতে নাহিদ ইসলাম, আসিফ মাহমুদ এবং হাসনাত আবদুল্লাহকে দেখা যাচ্ছে না।

আরো কিছু লেখা