তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন

হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তি প্রথম আলোর সাংবাদিক নন
তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউটের সামনে জঙ্গি হামলায় প্রথম আলোর শীর্ষ সাংবাদিক মামুনুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেক করে দেখা গেছে, হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহতের নাম তারিক সাইফ মামুন। একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে পুলিশের বরাতে বলা হয়েছে নিহত মামুন তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী ছিলেন। এছাড়া তিনি প্রথম আলোর কোনো কর্মী নন বলে ডিসমিসল্যাবকে নিশ্চিত করেছে সংবাদমাধ্যমটিও।
“ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে, জঙ্গি হা/ম/লা/য় প্রথম আলো শীর্ষ সাংবাদিক মামুনুর রহমান নিহত… জঙ্গি বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করার কারণেই উনাকে হত্যা করা হয়েছে। #Terrorist_Attack #Dhaka #Bangladesh” (বানান অপরিবর্তিত) বিবরণের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার হতে দেখা যায়। ভিডিওতে একজন ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থা রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরবর্তীতে তাকে স্ট্রেচারে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভিডিওটির কিফ্রেম ধরে সার্চ করে “দৈনিক আমাদের বার্তা”-এর একটি প্রতিবেদন পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে ব্যবহৃত রাস্তায় পড়ে থাকা এক ব্যক্তির ছবির সঙ্গে ভিডিওর ছবি পুরোপুরি মিলে যায়। প্রতিবেদনে কোতোওয়ালি জোন পুলিশের সহকারী কমিশনার ফজলুল হকের বরাতে বলা হয়, রাজধানীর পুরান ঢাকা এলাকায় ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে প্রকাশ্যে গুলিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। তবে এই প্রতিবেদন নিহতের কোনো পরিচয় উল্লেখ করা হয়নি।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কিওয়ার্ড ধরে সার্চ করলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক প্রতিবেদন (১, ২, ৩) পাওয়া যায়। প্রতিবেদনগুলো থেকে পাওয়া তথ্যমতে, গত ১০ নভেম্বর সোমবার রাজধানীর পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গুলিতে নিহত ব্যক্তির নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫)।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) আহসান উদ্দিন সামির সংবাদমাধ্যম ইত্তেফাকে বলেন, “নিহত মামুন একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী। যারা গুলি চালিয়েছে আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।” একই ঘটনা নিয়ে সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো “পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন, বলছে পুলিশ” শিরোনামে প্রতিবেদন করেছে। এসব প্রতিবেদনের কোনোটিতেই নিহত ব্যক্তির সাংবাদিক পরিচয়ের উল্লেখ নেই।
এছাড়া প্রথম আলো কর্তৃপক্ষকে নিহত ব্যক্তি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে উনি প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কোনো সাংবাদিক ছিলেন না বলে জানানো হয় ডিসমিসল্যাবকে।

অর্থাৎ, জঙ্গি হামলায় প্রথম আলোর শীর্ষ সাংবাদিক মামুনুর রহমানকে হত্যা করা হয়েছে দাবিতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি ভুয়া। নিহত ব্যক্তি প্রথম আলোর কোনো সাংবাদিক ছিলেন না, বরং সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনগুলোতে পুলিশের বরাতে শীর্ষ সন্ত্রাসী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তাকে।