আবরার ইফাজ

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
ভেনেজুয়েলায় ৭১ হাজার টাকায় কনডম: খবরটি আট বছর পুরোনো ও বিভ্রান্তিকর
This article is more than 8 months old

ভেনেজুয়েলায় ৭১ হাজার টাকায় কনডম: খবরটি আট বছর পুরোনো ও বিভ্রান্তিকর

আবরার ইফাজ

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

ভেনেজুয়েলায় এক প্যাকেট কনডমের দাম বাংলাদেশি টাকায় ৭১ হাজারের চেয়েও বেশি দাবি করে সম্প্রতি একটি খবর সামাজিক মাধ্যম ও মূলধারার গণমাধ্যমে ছড়াতে দেখা গেছে। কিন্তু যাচাই করতে গিয়ে দেখা গেছে, মূল খবরটি অন্তত আট বছর পুরোনো এবং এখন দেশটির বাজারে এই জন্মনিরোধক পণ্য বিক্রি হচ্ছে এর চেয়ে অনেক কম দামে।

সম্প্রতি চ্যানেল ২৪-এর লোগোসহ একটি ভিডিও একাধিক ফেসবুক পেজ ও গ্রুপ (, , ) থেকে শেয়ার করা হয়। ভিডিওতে বলা হয়, ভেনেজুয়েলায় স্বর্ণের চেয়ে কনডমের দাম বেশি এবং প্রতি প্যাকেটের মূল্য প্রায় ৭১ হাজার টাকা। খবরটি মূলত চ্যানেল ২৪-এর ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত হয় এবছরের ১৭ জুন। ফেসবুকে এখন পর্যন্ত ভিডিওটি ৫০ লাখেরও বেশি বার দেখা হয়েছে। ভিডিওটির শিরোনাম ছিল, “সোনার চেয়ে কনডমের দাম বেশি যে দেশে!

খবরটির ১৫ সেকেন্ড থেকে ৪৪ সেকেন্ডে বলা হয়, “বর্তমানে কনডমের একটি প্যাকেটের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭১ হাজার টাকারও বেশি।  শুধু কনডমই নয়, অন্যান্য গর্ভনিরোধক পণ্যের দামও আকাশছোঁয়া। দেশটিতে এই দাম বৃদ্ধির অন্যতম কারণ কঠোর জন্মনিয়ন্ত্রক বিধিআইন। এই আইনের কারণে ফার্মেসি বা সুপার মার্কেটে কনডম ও অন্যান্য গর্ভনিরোধক পণ্যের দাম বেড়ে গিয়েছে। সাম্প্রতিক খবর বলছে, পরিস্থিতি যেদিকে যাচ্ছে তাতে ভেনেজুয়েলার মানুষ আয়ের অর্ধেক টাকা খরচ করে ফেলেন কনডম কিনতে কিনতে।” ভিডিওতে খবরটির কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। তবে ৩ এপ্রিল, চ্যানেল ২৪ এর ওয়েবসাইটে এ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়, যেখানে ইন্ডিয়া টাইমসের ২০২২ সালে প্রকাশিত একটি খবরকে সূত্র উল্লেখ করা হয়। সংবাদটি একই সময় নাগরিক টিভিদৈনিক দেশের সংবাদেও প্রকাশিত হয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই সংবাদটি বিভিন্নভাবে (, , , , , ) ফেসবুকে হাজির হয়।

শুধু ২০২৩ সালে নয়, ২০২২ সালের ১২ জুন একই খবর প্রকাশ করে বাংলাদেশের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড। সেখানে কোনো সূত্র উল্লেখ করা হয়নি। সে বছর সূত্রহীনভাবে খবরটি এসেছে নিউজ২৪-এর অনলাইনেও। এ দুটি খবরের সাথেও ইন্ডিয়া টাইমসের ২০২২ সালের ১১ জুনে প্রকাশিত খবরটির মিল পাওয়া যায়। নিউজ ১৮-সহ একাধিক ভারতীয় গণমাধ্যমে একই সময়ে (, , ) খবরটি প্রকাশিত হতে দেখা গেছে। 

প্রতিবেদনগুলোতে বলা হয় যে সেই সময়ে ভেনেজুয়েলায় কনডমের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ৬০,০০০ ভারতীয় রূপিতে দাঁড়িয়েছে। তবে কোনো প্রতিবেদনেই এমন দাবির পক্ষে কোন খবর বা তথ্যসূত্রের উল্লেখ নেই। বাংলাদেশের দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদনে কনডমের মূল্য উল্লেখ করা হয় ৭১,০০০ টাকা। বিনিময় হার অনুযায়ী, ৭১ হাজার বাংলাদেশি টাকা সেই সময়ে ৬০ হাজার ভারতীয় রূপির সমমূল্যের ছিল। অর্থাৎ, বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো মূলত ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের অংকটাকেই ব্যবহার করেছে।

খবরটির সূত্র আসলে কী?

ভেনেজুয়েলায় কনডমের দামের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সংক্রান্ত সংবাদটির সূত্র অনুসন্ধান করতে গিয়ে ডিসমিসল্যাব সবচেয়ে পুরোনো যে সংবাদটি খুঁজে পায় তা মূলত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের। তারা ২০১৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি দ্য সেভেন হান্ড্রেড ফিফটি ফাইভ ডলার কনডম প্যাক ইজ দ্যা লেটেস্ট ইনডিগনিটি ইন ভেনেজুয়েলা শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, “ভেনেজুয়েলার লোকেরা দুর্লভ পণ্য পেতে নিলামের ওয়েবসাইট মার্কাদো লিবরে ব্যবহার করে যেখানে ৩৬-প্যাকের একটি ট্রোজান কনডম ৪৭৬০ বলিভারে (সরকারি বিনিময় হারে ৭৫৫ মার্কিন ডলার) বিক্রি হয়, যা দেশের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ৫৬০০ বলিভারের কাছাকাছি। যাদের ডলার ব্যবহারের সুযোগ রয়েছে, তাদের অনানুষ্ঠানিক কালোবাজারে কনডম কিনতে খরচ পড়ে ২৫ মার্কিন ডলার, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২১ মার্কিন ডলার”। খবরটির সাথে মার্কাদো লিবরের একটি লিংক ব্যবহার করা হলে সেই লিংকে এখন আর প্রবেশ করা যাচ্ছেনা। 

ব্লুমবার্গের পর বিবিসি, সিএনএন, টাইম, নিউজউইকসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমও খবরটি প্রকাশ করে। এর মধ্যে টাইমস এবং নিউজউইক ব্লুমবার্গকে সরাসরি সূত্র হিসেবে ব্যবহার করেছে। 

অর্থাৎ ২০১৫ সালের একটি খবরকে বাংলাদেশের গণমাধ্যম গত দু বছর ধরে সাম্প্রতিক খবর হিসেবে প্রকাশ করে আসছে।

ভেনেজুয়েলায় কনডমের বর্তমান দাম কেমন?

ব্লুমবার্গ, ট্রোজান ব্র্যান্ডের ৩৬টি কনডমের প্যাকেটের কথা বললেও ডিসমিসল্যাবের পক্ষে এই ব্র্যান্ডের পণ্যের বর্তমান মূল্য জানা সম্ভব হয়নি। কারাকাস ভিত্তিক ফার্মাতোদোতে তিনটি কনডমের এক প্যাকেট ডিউরেক্সের দাম ১২৪ ভেনেজুয়েলান বলিভার যা মার্কিন মুদ্রায় প্রায় ৩.৫০ ডলার। মার্কেদো লিবরে নামের অনলাইন বেচাকেনার সাইটে একই পণ্যের দাম দেখা যায়, ৬.৫ মার্কিন ডলার। সেই হিসেবে, ৩৬টি কনডমের প্যাকেটের দাম দাঁড়ায় বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮৫০০ টাকা বা এর কিছু বেশি।

সে সময় ব্লুমবার্গের এই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল ভেনেজুয়েলা সরকারের প্রতি সহানুভূতিশীল সংবাদমাধ্যম ভেনেজুয়েলা এনালাইসিস-এ। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের লাতিন আমেরিকার ইতিহাস বিষয়ক ডক্টরাল গবেষক লুকাস কোয়েরনারের লেখা সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্লুমবার্গের প্রতিবেদনে ৭৫৫ মার্কিন ডলারে কনডম বিক্রির যে তথ্য দেয়া হয়েছে, তা সত্য নয়, বরং ভেনেজুয়েলায় ৩টি ডিউরেক্স কনডমের একটি প্যাকেট সেই সময়ে ১০০-৩০০ বলিভার (৮-২৬ মার্কিন ডলার) খুচরা মূল্যে পাওয়া যাচ্ছিল।

এ ব্যাপারে আরো জানতে ডিসমিসল্যাব যোগাযোগ করে ভেনেজুয়েলা এনালাইসিসের সম্পাদক রিকার্দো ভাজের সঙ্গে। তিনি ডিসমিসল্যাবকে জানান, “এক প্যাকেট কনডমের দাম কখনোই ৭৫৫ মার্কিন ডলার ছিল না। সমস্যাটি হলো ভেনেজুয়েলায় সেই সময় কয়েক ধরনের বিনিময় মূল্য ছিল। একটি ধরন ছিল নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের জন্য, যেখানে অনেক বেশি ভর্তুকি দেওয়া হতো। অন্যান্য পণ্যের জন্য ছিল আরেক ধরনের বিনিময় মূল্য। এবং এগুলোর বাইরে কালোবাজারের বিনিময় মূল্য ছিল আরেক রকমের, যা কার্যত পণ্যের দাম বাড়িয়ে তুলতো (স্থানীয় মুদ্রায়)”।  

সেই প্রতিবেদনটির অন্যতম প্রতিবেদক ছিলেন আনাতোলি কুরমানেভ যিনি বর্তমানে নিউ ইয়র্ক টাইমসে কর্মরত আছেন। মিন্টপ্রেসে কর্মরত সাংবাদিক এল্যান ম্যাকলিউড তার বই ‘ব্যাড নিউজ ফ্রম ভেনেজুয়েলা: টুয়েন্টি ইয়ারস অফ ফেক নিউজ এন্ড মিসরিপোর্টিং’ (২০১৮) এর জন্য কুরমানেভের একটি সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। বইয়ের লেখকের দাবি, ব্লুমবার্গে কনডম সংক্রান্ত খবরটি প্রকাশের পরপরই তিনি এই সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন। সেখানে কুরমানেভ এই প্রতিবেদন সম্পর্কে নিজেই বলেন, “আমার কয়েকবারের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি আপনি কিছু কৌশল ব্যবহার করতে পারেন, আমি সেগুলোকে ‘সস্তা কৌশল’ বলব না, তবে হ্যাঁ, এক ধরনের ‘সেক্সি কৌশল’ বলা যায়। গত সপ্তাহে আমরা ভেনেজুয়েলায় কনডমের ঘাটতি সম্পর্কে একটি গল্প পাই। অফিসিয়াল এক্সচেঞ্জ রেটে কনডমগুলো ছিল ৭৫০ মার্কিন ডলার বা আরেকটু বেশি এবং শিরোনামটি ছিল ‘ভেনেজুয়েলায় ৭৫০ মার্কিন ডলারের কনডম’ এবং সবাই এটিকে (সংবাদে) ক্লিক করে, প্রত্যেকেই ভাবে, ‘খোদা, কেন তারা ৭৫০ মার্কিন ডলারে এই জিনিস বিক্রি করে?’’। 

এছাড়া, বাংলাদেশ ও ভারত থেকে প্রকাশিত হওয়া প্রতিবেদনগুলোতে বলা হচ্ছে কঠোর গর্ভপাত বিরোধী আইনের কারণে দাম এতো বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড কোনো সূত্র উল্লেখ না করেই বলছে, “দেশটিতে এই দামবৃদ্ধির পেছনে অন্যতম কারণ কঠোর জন্ম নিয়ন্ত্রক বিধি আইন।” কিন্তু গর্ভপাত বিরোধী আইনের কারণে এমনটি ঘটেছিল বলে বিশ্বাস করেন না রিকার্দো ভাজ। তিনি ডিসমিসল্যাবকে জানান, “মূল্য বৃদ্ধির জন্য অনেকাংশে দায়ী হলো মুদ্রার ফটকাবাজি ও দুর্নীতি। মূলত, বৃহৎ ব্যবসাগুলো অপরিহার্য আমদানির দোহাই দিয়ে সুলভ হারে ডলার কেনে। এবং তারপর তারা হয় দ্রুত লাভের জন্য সে ডলার বিক্রি করে দেয় অথবা কালোবাজারের বিনিময় হারে পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে।” 

এই বিষয়ে আরো জানতে ডিসমিসল্যাব যোগাযোগ করে কারাকাস-ভিত্তিক এফেক্তো ককুইয়োর সাংবাদিক আলেসান্দ্রো দি স্তাসিওর সাথে। আলেসান্দ্রো বলেন, “সরকার প্রতি ডলারের যে দাম বলেছে এবং ভেনেজুয়েলার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষকে প্রতিটি ডলার যে দামে কিনতে হয়েছে, তার মধ্যে বিশাল পার্থক্য চিহ্নিত করতে ৭৫৫ ডলার মূল্যের একটি কনডমের প্যাকেটের উল্লেখটি একটি উদাহরণ হিসাবে কাজ করেছে। তবে হ্যাঁ, ভেনেজুয়েলা এনালাইসিস ঠিক বলেছে যে আপনি কখনই ৭৫৫ ডলার দামে কনডমের প্যাকেট পাবেন না, যেহেতু আমি আগেই বলেছি, এখানে মানুষ বাজারের মূল্য দিয়ে চালিত হয়, সরকার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত মূল্য দিয়ে নয়।”

বারবার ভুয়া খবরের বিষয় ভেনেজুয়েলা

ভেনেজুয়েলাকে নিয়ে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচারের নজির আরো পাওয়া গেছে। যেমন, ২০১৬ সালের ২৪ মে সংবাদ সংস্থা এএফপি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছিল, ভেনেজুয়েলায় হ্যামবার্গারের দাম বেড়ে প্রতিটি ১৭০ মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। পরবর্তীতে বিনিময় হারের হিসাব করতে ভুল হয়েছে স্বীকার করে এএফপি প্রতিবেদনটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু প্রতিবেদনটি আরো অনেকেই পুনঃপ্রকাশ করে এবং তা এখনো অনলাইনে পাওয়া যায় (, )।

এছাড়াও, বাংলাদেশের চ্যানেল ২৪-এর সাম্প্রতিক ভিডিওতে আরো বলা হয় ভেনেজুয়েলা পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি বিয়ার পান করা দেশ। অথচ, ২০২৩ সালের বিবিসি সায়েন্স ফোকাসে সবচেয়ে বেশি বিয়ার পান করা ১০টি দেশের তালিকায় ভেনেজুয়েলা নেই।  

সাংবাদিক ও গবেষক এলান ম্যাকলয়েড পশ্চিমা গণমাধ্যমে ভেনেজুয়েলার কাভারেজ নিয়ে লেখেন, “কর্পোরেট মিডিয়াগুলোর অনেক সাংবাদিক অনেক সময় ‘অত্যাচারী’ সমাজতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে তথ্যযুদ্ধে নিজেদেরকে আদর্শিক অগ্রসর বাহিনী হিসেবে দেখেন।”  তিনি ডিসমিসল্যাবকে বলেন, “ এ বিষয়ে পাঠকদের সতর্ক হওয়া উচিত, কারণ ভেনেজুয়েলা নিয়ে হওয়া সংবাদ কখনো কখনো মিথ্যাও হতে পারে।” 

কারাকাস-ভিত্তিক এফেক্তো ককুইয়োর সাংবাদিক আলেসান্দ্র দি স্তাসিও ভেনেজুয়েলা নিয়ে রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি ডিসমিসল্যাবকে বলেন, “কোনো সাংবাদিক যদি ভেনেজুয়েলার বাস্তবতার সঙ্গে পরিচিত না হন, এবং পাঠক-দর্শককে জানাতে চান যে ভেনেজুয়েলায় কী ঘটছে, তাহলে তাদের জন্য আমার পরামর্শ হলো, ভেনেজুয়েলার সমস্যাগুলো বুঝতে সময় নিন, (কখনোই শুধুমাত্র সরকারি সংস্করণে যা আছে তা মেনে না নিয়ে) বিভিন্ন উৎস খোঁজ করুন এবং এই সহজ ভাষায় (অনেক উদাহরণসহ) গল্পগুলোকে ব্যাখ্যা করুন, যেগুলো প্রায়ই অনেক জটিল হতে পারে।”

আরো কিছু লেখা