তামারা ইয়াসমীন তমা
ছয় বছরের পুরোনো ছবি দিয়ে মুসকানের মৃত্যুর ভুয়া খবর প্রচার
তামারা ইয়াসমীন তমা
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে হিজাব পরিহিত অচেতন একটি মেয়ের ছবি শেয়ার করে (১, ২, ৩) ভারতের কর্ণাটকে হিজাব আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী মুসকান খানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে ছবিটি ছয় বছর আগে কাশ্মীরে একটি বিক্ষোভ চলাকালে তোলা ছবি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতেও একই দাবি সম্বলিত পোস্ট (১, ২, ৩, ৪) ভাইরাল হতে দেখা যায়।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া ছবির সঙ্গে ক্যাপশনে লেখা আছে, “মুসকান আর নেই। ইন্না-লিল্লাহি ও ইন্নাইলাহি রাজিউন। ভারতে আল্লাহু আকবারের ধ্বনীতে যে ইসলামী বীর মুসকান বিশ্ব কাঁপিয়ে ছিলেন কাফেরের দলের আর সহ্য হয়নি, আল্লাহ তুমি তোমার প্রিয় বান্ধীকে জান্নাতের উচ্চ মাকাম দান কর আমিন আমিন আমিন।”
ছবিটি রিভার্স ইমেজ সার্চে দেখা যায় এটি ২০১৭ সালের ছবি। সংবাদ মাধ্যম রেডিফ ডট কমের একটি প্রতিবেদনে ছবিটি প্রকাশিত হয়। ছবিটি তুলেন ফটোগ্রাফার ওমর গনি। মূলত ২০১৭ সালের এপ্রিলে কাশ্মীরে একটি আন্দোলন চলাকালীন সময়ে ছবিটি তোলা হয়।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে কাশ্মীরের মাওলানা আজাদ রোডে শ্রী প্রতাপ কলেজের কাছে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে নামলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষেরই কিছু ছবি প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে। অর্থাৎ, মুসকানের নামে প্রচারিত ছবিটি ছয় বছরের পুরোনো একটি ছবি।
২০২২ সালে একই ভুয়া দাবিতে ছবিটি ছড়ালে কুইন্ট ছবিটির মূল ফটোসাংবাদিক ওমন গনির সঙ্গে যোগাযোগ করলে, গনি ২০১৭ সালে কাশ্মীরের বিক্ষোভের সময় ছবিটি তোলার সত্যতা নিশ্চিত করেন।
এর আগে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারতের কর্ণাটকে হিজাব আন্দোলনের কারণে পরিচিত মুখ হয়ে উঠে মুসকান খান। সেসময় ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যায়, হিজাব পরিহিত মুসকান নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে কয়েকজন যুবক তার পথ রোধ করে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকে। তবে মুসকান তাতে দমে না গিয়ে ‘আল্লাহু আকবর’ স্লোগান দিয়ে নিজের প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে। পরবর্তীতে সামাজিক মাধ্যমে ভিডিওটি ছড়ালে মুসকান জনপ্রিয় হয়ে উঠেন।
অতীতে মুসকানকে ঘিরে বেশকিছু ভুয়া তথ্য ছড়াতে দেখা গেছে। গত মে মাসে কর্ণাটকের আরেক হিজাব আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী তাবাসসুম সাইক দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় কলা বিভাগ থেকে রাজ্যে প্রথম স্থান অর্জন করলে তার ছবিও মুসকান খানের বলে প্রচারিত হয়। এছাড়া মুসকানের সঙ্গে আরেক ব্যক্তির ছবি শেয়ার করে মুসকানের বাবা দাবি করে প্রচারিত হতে থাকে।