তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন

ফেলো, ডিসমিসল্যাব
অক্টোবর ১৪, ২০২৫
১৭:১৫:৫৩
ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার

ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার

অক্টোবর ১৪, ২০২৫
১৭:১৫:৫৩

তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন

ফেলো, ডিসমিসল্যাব

ইসরায়েলে ঘুরতে গিয়ে এক ভারতীয় তরুণী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ডিসমিসল্যাব ফ্যাক্টচেক করে দেখেছে, ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সের অরলিন্স জাস্টিস সেন্টার থেকে ১০ কয়েদির পালানোর ঘটনার। 

ফেসবুকে গত ১০ আগস্টে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির ভেতরে লেখা ছিল, “ভ্রমণে এসে ভারতীয় তরুণী ইসরায়েলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার।” পোস্টের ক্যাপশনে লেখা, “পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে দৌড়ে পালায়।। এখন পর্যন্ত আটক তিন।।” (বানান অপরিবর্তিত)। ভিডিওটি এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ লাখ ব্যবহারকারী দেখেছেন।

ভিডিওর ওপরে বাম পাশে আলজাজিরা-র লোগো, এর নিচে আরবিতে লেখা ‘লাইভ’। ভিডিওতে চলমান আরবি লেখা অনুবাদ করে ডিসমিসল্যাব। আরবি লেখা অনুসারে, আরবি লেখা অনুসারে, যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা রাজ্যের নিউ অরলিন্সের একটি কারাগার থেকে ১০ জন ‘বিপজ্জনক’ বন্দী পালিয়ে গেছে — এটি একটি নজরদারি ক্যামেরায় ধারণ করা হয়েছে। ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এদের ৩ জনকে পুলিশ আটক করেছে। পলাতক ৭ জনকে খুঁজতে তল্লাশি চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। 

ভিডিওতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানা রাজ্যের নিউ অরলিন্সের একটি কারাগারের দৃশ্য এটি। ভিডিওটির উপরে ডান পাশে আরবিতেও লোকেশন দেওয়া “লুইজিয়ানা, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র”। পরবর্তী ফুটেজে পুলিশের সামনে লুইজিয়ানা লেখা হেলিকপ্টারও দেখা যায়।

ভিডিওতে আটক তিনজনের ছবি ও নাম দেখা যায় কেন্ডাল মাইলস, রবার্ট মুডি ও কেনান ডেনিস। ভিডিওতে দৌড়ে পালানো কয়েকজন কয়েদির গায়ে কমলা রং-এর পোশাক দেখা যায় — এটি নিউ অরলিন্সের সেই কারাগারের কয়েদিদের পোশাকের সঙ্গে মিলে যায়। 

ভিডিওর সূত্র যাচাইয়ে রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে এ ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক ভিডিও প্রতিবেদন (, , )। এসব প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার নিউ অরলিন্সের একটি কারাগার থেকে ১০ জন বন্দির পালিয়ে যাওয়ার ঘটনার বর্ণনা দেওয়া হয়েছে — যা যাচাই করা ভিডিওর আরবি ক্যাপশনে বর্ণনা করা ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়।

  • ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার
  • ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার
  • ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার
  • ইসরায়েলে ভারতীয় তরুণীর ধর্ষণের দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রের কয়েদি পালানোর ভিডিও প্রচার

একই আরবি ফন্টে আলজাজিরার ভিডিও প্রতিবেদনেও তাই বলা হয়েছে। রিভার্স ইমেজ সার্চে আরও দেখা যায়, যাচাই করা ভিডিওতে লুইজিয়ানা লেখা হেলিকপ্টারের সামনে পুলিশের ছবিটি সেই ঘটনায় পলাতক কয়েদিদের খুঁজতে পুলিশের টহল দেওয়ার সময় তোলা। যাচাই করা ভিডিওতে থাকা আটক ৩ জনের ছবি ও নাম গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে কারাগার থেকে পালানো ও পরে আটক হওয়া ৩ জনের নাম ও ছবির সাথে মিলে যায়। 

অর্থাৎ, ইসরায়েলে ঘুরতে গিয়ে ভারতীয় তরুণী ধর্ষণের শিকার হওয়ার দাবিটি সঠিক নয়। মূল ভিডিওটি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ অরলিন্সের অরলিন্স জাস্টিস সেন্টার থেকে ১০ জন কয়েদির পালানোর ঘটনার। এর সঙ্গে কোনো ভারতীয় তরুণী কিংবা ইসরায়েলের কোনো সম্পর্ক নেই।

আরো কিছু লেখা