তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন

শাহজালাল বিমানবন্দরে যাত্রীদের উদ্ধারের দাবিতে ছড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ভিডিও
তাসনিম তাবাস্সুম মুনমুন
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের আগুনে মানুষকে উদ্ধারের দাবিতে একটি ভিডিও সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে যাচাইয়ে দেখা যায়, ২ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের সেই ভিডিওর শুরুর ১ মিনিট ২৯ সেকেন্ড পর্যন্ত দৃশ্য বাংলাদেশের নয়। এটি প্রায় তিন মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুনের ঘটনার পুরোনো ভিডিও।
সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে,আগুন ও ধোঁয়ায় আতঙ্কিত যাত্রীরা এসকেপ স্লাইড দিয়ে বিমান থেকে বেরিয়ে আসছেন। ভিডিও এর ক্যাপশনে লেখা, “🚨🔥 ঢাকা কাঁপিয়ে দিয়েছে এই ভিডিও! 😭 হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভয়াবহ আগুন — এখন চলছে উদ্ধার অভিযান! 👇 দেখুন সেই বাস্তব দৃশ্য ‘যেখানে হাজার মানুষের জীবন ঝুঁকিতে — সেখানে নিরাপত্তা কই?’ 😢 হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ আগুনের সেই দৃশ্য!” ভিডিও এর উপরেও লেখা, “হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে ভয়াবহ।”

ভিডিওটির সূত্র যাচাইয়ে কি-ফ্রেম ধরে সার্চ করলে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন (১, ২, ৩)। এসব প্রতিবেদনের ভিডিও-এর সঙ্গে যাচাই করা ভিডিও-এর শুরুর প্রায় দেড় মিনিটের দৃশ্য পুরোপুরি মিলে যায়। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গণমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, গত ২৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে স্থানীয় সময় দুপুর পৌনে ৩টায় আমেরিকান এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ারে আগুন লাগার পরবর্তী দৃশ্য এটি।

ডেনভার থেকে মায়ামি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাওয়ার সময় আমেরিকান এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট ৩০২৩ রানওয়েতে থাকতেই ল্যান্ডিং গিয়ারে আগুনের এই ঘটনাটি ঘটে। বিমান সংস্থাটি সিবিএস নিউজকে জানিয়েছে, বিমানে থাকা ছয়জন ক্রুসহ ১৭৩ জন যাত্রীর সবাই নিরাপদে বেরিয়ে এসেছেন। মূল ভিডিও ধারণ করা যাত্রী মার্ক সুরকিস এর সাথেও কথা বলে সিবিএস নিউজ।

অর্থাৎ, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আগুন থেকে মানুষকে উদ্ধারের দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও এর শুরুর অংশটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ডেনভার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের। এর সঙ্গে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের আগুনের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ অক্টোবর, শনিবার, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে সময় লাগে প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টা এবং ৩৫ জন আহতও হয়।