ফারিহা আফরীন

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিয়ে আমার দেশের নামে ছড়াচ্ছে একাধিক ভুয়া ফটোকার্ড
ফারিহা আফরীন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে জড়িয়ে “আমার দেশ” সংবাদমাধ্যমের নামে একাধিক ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। একটি ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে বিএনপি চাইলে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চায় জামায়াত। আরেকটি ফটোকার্ডে বলা হয়েছে সিআইডি দাবি করেছে হাদি হত্যায় ব্যবহৃত ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর ইসলামি ব্যাংক এর অ্যাকাউন্টে। ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেকে দেখা গেছে, দুটি ফটোকার্ডই ভুয়া।
“বিএনপি চাইলে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাই জামায়াত”- দাবিতে ছড়ানো ফটোকার্ডটি ভুয়া
“বিএনপি চাইলে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাই জামায়াত।” এমন বার্তা দিয়ে আমার দেশ পত্রিকার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড ফেসবুকে ছড়িয়েছে। তবে ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, এমন কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ প্রকাশ করেনি।
ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের ছবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি ছড়িয়ে পড়ে। সাংবাদিকদের সামনে জামায়াত আমিরের বক্তব্যের ছবি ব্যবহার করে তৈরি সে ফটোকার্ডে লেখা, “বিএনপি চাইলে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাই জামায়াত” (বানান অপরিবর্তিত)।

কার্ডের উপরে আমার দেশ পত্রিকার লোগো দেওয়া। এছাড়া কার্ডের নিচে সংবাদমাধ্যমটির ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া। অন্য পাশে তারিখ হিসেবে “২১ ডিসেম্বর ২০২৫” লেখা। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফটোকার্ডটি ১০ বার শেয়ার করা হয়েছে, প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে ২১১টি।
ফটোকার্ডের সত্যতা নিশ্চিত করতে আমার দেশ পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ২১ ডিসেম্বরের ফটোকার্ড ও পোস্টগুলো যাচাই করে দেখে ডিসমিসল্যাব। নির্দিষ্ট এই তারিখে এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড বা প্রতিবেদনের লিংক সংবাদমাধ্যমের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে একই ছবি ব্যবহার করে “খু/নিরা পার পেয়ে গেলে কেউ নিরাপদ থাকবে না” লেখা একটি ফটোকার্ড প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যমটি।

এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আমার দেশ পত্রিকার সাথে যোগাযোগ করে ডিসমিসল্যাব। আমার দেশের সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম জানিয়েছেন, প্রচারিত ফটোকার্ডটি আমার দেশ পত্রিকার নয়।
অর্থাৎ, আমার দেশ পত্রিকার নামে ছড়ানো ফটোকার্ডটি ভুয়া। “বিএনপি চাইলে তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চাই” জামায়াত দাবিতে কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশ করেনি।
“হাদি হত্যার ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর ইসলামি ব্যাংকে: সিআইডি”- দাবিতে ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার
সিআইডি দাবি করেছে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান বিন হাদি হত্যায় ব্যবহৃত ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর ইসলামি ব্যাংক এর অ্যাকাউন্টে। ফেসবুকে ছড়ানো আমার দেশ পত্রিকার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ডে এমন একটি বার্তা দেওয়া হয়েছে। তবে ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, এমন কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ প্রকাশ করেনি।
ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে গত ২৩ ডিসেম্বর ওসমান হাদির ওপর হামলায় জড়িত দুই সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদ ও আলমগীর শেখ এর ছবি এবং ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশের লোগো সংযুক্ত ফটোকার্ডটি ছড়িয়ে পড়ে। আমার দেশ পত্রিকার অনুকরণে বানানো সেই ফটোকার্ডের ভেতরে লেখা “হাদি হত্যার ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর ইসলামি ব্যাংকে: সিআইডি।”
কার্ডের উপরে আমার দেশ পত্রিকার লোগো দেওয়া। এছাড়া নিচের ডানপাশে “২৩ ডিসেম্বর ২০২৫” এবং বামদিকে পত্রিকার ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া। ফেসবুক একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল এবং গ্রুপ থেকেও একই উক্তিসহ ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়।
ফটোকার্ডের সত্যতা নিশ্চিত করতে আমার দেশ পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ২৩ ডিসেম্বরের ফটোকার্ড ও পোস্টগুলো যাচাই করে দেখে ডিসমিসল্যাব। নির্দিষ্ট এই তারিখে এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড বা খবর সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

বিস্তারিত জানতে ডিসমিসল্যাব যোগাযোগ করলে আমার দেশের সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম জানিয়েছেন, এমন কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ প্রকাশ করেনি।
অর্থাৎ, আমার দেশের নামে ছড়ানো ফটোকার্ডটি ভুয়া। ২৩ ডিসেম্বর হাদি হত্যার ১২৭ কোটি টাকা লেনদেন করা হয় জামায়াতে ইসলামীর ইসলামি ব্যাংকে: সিআইডি দাবিতে এমন কোনো ফটোকার্ড পত্রিকাটি প্রকাশ করেনি।