সুদেষ্ণা মহাজন অর্পা

ইন্টার্ন, ডিসমিসল্যাব

ফারিহা আফরীন

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
সাদিক কায়েমকে জড়িয়ে আমার দেশের একাধিক ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

সাদিক কায়েমকে জড়িয়ে আমার দেশের একাধিক ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

ফারিহা আফরীন

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

সুদেষ্ণা মহাজন অর্পা

ইন্টার্ন, ডিসমিসল্যাব

সাদিক কায়েমকে জড়িয়ে সংবাদমাধ্যম আমার দেশের দাবিতে একাধিক ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার করা হচ্ছে। একটি ফটোকার্ডে দাবি করা হয়েছে ওসমান হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম মাসুদের কললিস্টে ডাকসু ভিপির নাম্বার পাওয়া গেছে। আরেকটি ফটোকার্ডে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিচয় নিয়ে মন্তব্য করতে দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদককে। ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেকে দেখা গেছে, দুটি ফটোকার্ডই ভুয়া।

ওসমান হাদিকে গুলি করা ঘাতকের কল লিস্টে সাদিক কায়েমের নাম্বার- দাবিতে ছড়ানো আমার দেশের ফটোকার্ডটি ভুয়া

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে গুলি করা ঘাতকের কল লিস্টে ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েমের নাম্বার পাওয়া গিয়েছে। এই দাবিতে আমার দেশ পত্রিকার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। তবে ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, এমন কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ প্রকাশ করেনি।

ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে গত ১৩ ডিসেম্বর ওসমান হাদিকে গুলি করা সন্দেহভাজন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল করিম মাসুদ ওরফে দাউদ খানের ছবি সম্বলিত ফটোকার্ডটি ছড়িয়ে পড়ে। আমার দেশ পত্রিকার অনুকরণে সৃষ্ট সেই ফটোকার্ডের ভেতরে ফয়সাল করিম মাসুদের অনেকগুলো ছবি সংযুক্ত করে লেখা “ওসমান হাদিকে গুলি করা ঘাতকের কল লিস্টে সাদিক কায়েমের নাম্বার।”

কার্ডের উপরে মাঝামাঝি অবস্থানে আমার দেশ পত্রিকার লোগো দেওয়া। এছাড়া কার্ডের নিচে দুইপাশে “১২ ডিসেম্বর ২০২৫” এবং আমার দেশ পত্রিকার ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ফটোকার্ডটি ৪২ বার শেয়ার করা হয়েছে, প্রতিক্রিয়া দেখানো হয়েছে ৩৫০টি।

ফটোকার্ডের সত্যতা নিশ্চিত করতে আমার দেশ পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ১২ ডিসেম্বরের ফটোকার্ড ও পোস্টগুলো যাচাই করে দেখে ডিসমিসল্যাব। তবে নির্দিষ্ট এই তারিখে এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড বা খবর সংবাদমাধ্যমটির অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে আমার দেশ পত্রিকার সাথে যোগাযোগ করে ডিসমিসল্যাব। আমার দেশের সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম জানিয়েছেন, প্রচারিত ফটোকার্ডটি আমার দেশ পত্রিকার নয়।

অর্থাৎ, আমার দেশ পত্রিকার নামে ছড়ানো ফটোকার্ডটি ভুয়া। ওসমান হাদিকে গুলি করা ঘাতকের কল লিস্টে সাদিক কায়েমের নাম্বার পাওয়া সংক্রান্ত কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ পত্রিকা প্রকাশ করেনি।

১৪ই ডিসেম্বর হত্যার শিকার সবাই বুদ্ধিজীবী নয়, ভারতের দালাল ছিলেন- সাদিক কায়েমের মন্তব্য দাবিতে আমার দেশের ভুয়া ফটোকার্ড প্রচার

১৯৭১ সালের ১৪ই ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের সময় হত্যার শিকার কেউ বুদ্ধিজীবী ছিলেন না উক্তি করেছেন ডাকসু ভিপি ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম। এই উক্তিতে আমার দেশ পত্রিকার লোগোযুক্ত একটি ফটোকার্ড সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়েছে। তবে ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, এমন কোনো ফটোকার্ড আমার দেশ প্রকাশ করেনি।

ফেসবুকে একটি গ্রুপ থেকে আজ ১৪ ডিসেম্বর ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েমের ছবি সংযুক্ত ফটোকার্ডটি ছড়িয়ে পড়ে। আমার দেশ পত্রিকার অনুকরণে বানানো সেই ফটোকার্ডের ভেতরে লেখা “১৪ ডিসেম্বর যাদের হত্যা করা হয়েছিল তারা কেউ বুদ্ধিজীবী ছিলো না,ভারতের দালাল ছিলো: সাদিক কায়েম।”

কার্ডের উপরে আমার দেশ পত্রিকার লোগো দেওয়া। এছাড়া নিচের ডানপাশে “১৪ ডিসেম্বর ২০২৫” এবং বামদিকে পত্রিকার ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেওয়া। ফেসবুক একটি ব্যক্তিগত প্রোফাইল এবং গ্রুপ থেকেও একই উক্তিসহ ফটোকার্ডটি পোস্ট করা হয়।

ফটোকার্ডের সত্যতা নিশ্চিত করতে আমার দেশ পত্রিকার অফিশিয়াল ফেসবুক পেজের ১৪ ডিসেম্বরের ফটোকার্ড ও পোস্টগুলো যাচাই করে দেখে ডিসমিসল্যাব। নির্দিষ্ট এই তারিখে এ ধরনের কোনো ফটোকার্ড বা খবর সংবাদমাধ্যমটির ফেসবুক পেজে খুঁজে পাওয়া যায়নি।

ফটোকার্ডটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত যাচাইয়ে পত্রিকাটির সঙ্গে যোগাযোগ করে ডিসমিসল্যাব। সহযোগী সম্পাদক আলফাজ আনাম ডিসমিসল্যাবকে নিশ্চিত করেন এই ফটোকার্ডটি ভুয়া।

অর্থাৎ, আমার দেশের নামে ছড়ানো ফটোকার্ডটি ভুয়া। ১৪ ডিসেম্বর হত্যার শিকার সবাই বুদ্ধিজীবী নয় ভারতের দালাল ছিলেন- সাদিক কায়েমের উক্তিসহ এমন কোনো ফটোকার্ড পত্রিকাটি প্রকাশ করেনি।

এর আগেও সাদিক কায়েমের নামে একাধিক ভুয়া তথ্য ছড়িয়েছে যা ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

আরো কিছু লেখা