নোশিন তাবাসসুম

পুলিশ হত্যার বিচার চেয়ে সম্মিলিত মিছিলের ছবিটি এআই দিয়ে বানানো
নোশিন তাবাসসুম
পুলিশ হত্যার বিচার চেয়ে বাংলাদেশ পুলিশ, আর্মি, বিজিবি (বিডিআর), ও আনসার বাহিনী সম্মিলিত প্রতিবাদ মিছিল করছে। সে মিছিলের শুরু হয়েছে “ঢাকা পুলিশ লাইনস” থেকে- এমন দাবিতে একটি ছবি ছড়িয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এবং ইনস্টাগ্রামে। তবে ডিসমিসল্যাবের ফ্যাক্টচেকে দেখা যায়, ছবিটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সাহায্যে তৈরি।
গত ১৫ ডিসেম্বর একটি ফেসবুক পেজ থেকে ছবিটি পোস্ট করে ক্যাপশনে বলা হয়, “পুলিশ হত্যার বিচার চাই! ঢাকা পুলিশ লাইনস থেকে শুরু হওয়া বাংলাদেশ পুলিশ, আর্মি, বিজিবি (বিডিআর), ও আনসার বাহিনীর সম্মিলিত প্রতিবাদ মিছিল।”

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পোস্টটি ১ হাজার ৭০০ বারের বেশি শেয়ার করা হয়েছে। পোস্টের কমেন্টে দেখা যায় অনেকেই ছবিটিকে সত্য বলে ধরে নিয়েছেন। এক ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, “পুলিশ হত্যাকারীদের বিচার চাই।” আরেকজন মন্তব্য করেছেন, “সাধারণ জনগণ সবাই পুলিশ হত্যার বিচার চায়।”
ফেসবুকের একাধিক (১, ২) ব্যক্তিগত প্রোফাইল থেকে ছবিটি পোস্ট করা হয়। ইনস্টাগ্রামেও একই দাবিতে ছবিটি পোস্ট হতে দেখা যায়।
ছবিতে দেখা যায়, “বাংলাদেশ পুলিশ” লেখা সম্বলিত একটি পিচ রঙা তোরণের সামনে বেশ কিছু পুলিশ সদস্য একটি ব্যানার হাতে দাঁড়িয়ে আছেন। ব্যানারে লেখা, “পুলিশ হত্যার বিচার চাই” বাংলাদেশ পুলিশ, আর্মি, বিজিবি (বিডিআর), ও আনসার – এক হও!”।” মিছিলের কিছু ব্যক্তি বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর পোশাক পরিহিত। মিছিলের প্রথম সারির দুই পাশে অবস্থান করা ব্যক্তি ভিন্ন পোশাক পরিহিত।
সত্যতা যাচাইয়ে দেখা যায়, ঢাকা পুলিশ লাইনস বলে কোনো স্থান বা স্থাপনার অস্তিত্ব নেই। ঢাকায় অবস্থিত পুলিশ লাইনের নাম “রাজারবাগ পুলিশ লাইনস”। এ বিষয়ে ডিসমিসল্যাব একাধিক (১, ২, ৩) ছবি পর্যবেক্ষণ করে দেখেছে। রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের কোনো গেইটের আকৃতি ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখানো স্থাপনার মতো না। মিছিলে ব্যবহৃত প্ল্যাকার্ডগুলোতে কিছু অক্ষর রয়েছে, যা কোনো শব্দ বা অর্থ তৈরি করে না।
তাছাড়া এআই কনটেন্ট শনাক্তকরণ টুল হাইভ মডারেশন দিয়ে যাচাই করে দেখা গেছে, ছবিটির এআই দিয়ে তৈরির ৯৯.৮ শতাংশ পর্যন্ত সম্ভাবনা আছে। এ থেকে বোঝা যায় ছড়ানো ভিডিওটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরির সম্ভাবনা অনেক বেশি।

অর্থাৎ, পুলিশ হত্যার বিচার চেয়ে সম্মিলিত বাহিনীর মিছিলের ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর আগেও পুলিশ সদস্যকে জড়িয়ে এআই কন্টেন্ট নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডিসমিসল্যাব।