আহমেদ ইয়াসীর আবরার
লুট হওয়া অস্ত্র ফেরতের ঘটনা ভিন্ন দাবিতে প্রচার
আহমেদ ইয়াসীর আবরার
খিলগাঁওয়ের মসজিদ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করেছে সেনাবাহিনী এমন দাবিতে কিছু ছবি ছড়াতে দেখা যাচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে। কেউ কেউ দাবি করেছে গত এক বছর ধরে অস্ত্রগুলো লুকিয়ে রাখা হয়েছিল মসজিদটিতে। তবে ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায় এই ছবিগুলো এক বছরের পুরোনো এবং এটি মূলত লুট হওয়া অস্ত্রের হস্তান্তরের সময়ের দৃশ্য।
“মসজিদের আসল কাজ নামাজ নয়, আসল কাজ সন্ত্রাস। আসল কাজ নামাজিদের জঙ্গি দীক্ষায় দীক্ষিত করা, জঙ্গিদের হাতে অস্ত্র দেওয়া, মুক্তচিন্তকদের হত্যা করা। গত বছরের জুলাই আগস্ট মাসে থানার পুলিশদের জবাই করে জঙ্গিরা থানা লুট করে অস্ত্র এনে মসজিদে রেখেছে। এসব উদ্ধার হলো এক বছর পর।”- এই ক্যাপশনে পোস্ট হতে দেখা গিয়েছে সামাজিক মাধ্যমে (১, ২, ৩)। আবার কেউ কেউ লিখছে (১, ২), “একবছর ধরে এতোগুলো অস্ত্র মসজিদে লুকিয়ে রেখেছিল কেউ টের পায়নি??? অস্ত্র লুটের সাথে কারা জড়িত ছিলো?এসব পরিস্কার হওয়া দরকার।” একই দাবিতে পোস্ট হতে দেখা গিয়েছে এক্সেও।

এই পোস্টগুলোর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছিল বেশকিছু ছবি। ছবিগুলোতে দেখা যাচ্ছে একটি মসজিদ সদৃশ একটি জায়গায় সারিবদ্ধভাবে অস্ত্র সাজানো। আরেকটি ছবিতে সেনাবাহিনীর গাড়িতে অস্ত্র তোলার দৃশ্য দেখা যায় যেখানে সেনা সদস্যের পাশাপাশি কয়েকজন ব্যক্তিও অস্ত্র তুলতে সাহায্য করছেন।
এই ছবিগুলোর রিভার্স ইমেজ সার্চ করলে চ্যানেল টুয়েন্টি-ফোরের একটি প্রতিবেদন সামনে আসে ডিসমিসল্যাবের। ২০২৪ সালের ৭ আগস্টে প্রকাশিত এই প্রতিবেদনের শিরোনাম ছিল, “খিলগাঁও থানার লুট হওয়া শতাধিক অস্ত্র ফিরিয়ে দিলেন এলাকাবাসী”। এই প্রতিবেদনটিতে ফেসবুক পোস্টে ব্যবহৃত প্রত্যেকটি ছবিই দেখতে পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, “রাজধানীর খিলগাঁও থানা থেকে লুট হওয়া শতাধিক আগ্নেয়াস্ত্র খিলগাঁও ঈমানবাগ জামে মসজিদে উদ্ধার করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে। বুধবার (৭ আগস্ট) দুপুরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় এসব আগ্নেয়াস্ত্র ফেরত দেয়া হয়।” মূলত ৫ আগস্টের পর পুলিশের শতাধিক অস্ত্র দখলে নেয়ার পর সেগুলো পরবর্তীতে ৭ আগস্টে খিলগাঁও ঈমানবাগ জামে মসজিদে এনে জমা করেন এলাকাবাসী। পরবর্তীতে সেগুলো সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।
অর্থাৎ, গত এক বছর ধরে মসজিদে লুকিয়ে রাখা অস্ত্র উদ্ধারের দাবিটি সত্য নয়।

উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট, শনিবারে সেনাবাহিনীর একটি অভিযানে নিউমার্কেট এলাকার কয়েকটি দোকান ও গুদাম থেকে প্রায় ১১০০ টি অস্ত্র উদ্ধার হয়। এসব অস্ত্র বিক্রি ও সরবারহের অভিযোগে ৯ জনকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে বলে জানা যায় সংবাদ প্রতিবেদনে।