তৌহিদুল ইসলাম রাসো
উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের ভাইরাল উক্তিটি ভুয়া
তৌহিদুল ইসলাম রাসো
সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মন্তব্য হিসেবে একটি পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে একাধিক ব্যক্তিগত আইডি (১, ২), পেজ (১, ২) ও গ্রুপ (১, ২) থেকে একই লেখা পোস্ট করে বলা হচ্ছে ড. আসিফ নজরুল এই উক্তিটি করেছেন। তবে যাচাইয়ে দেখা গেছে মন্তব্যটি ভুয়া। এমন কোনো মন্তব্য করেননি আইনের এই অধ্যাপক।
ভাইরাল ফেসবুক পোস্টগুলোতে উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুলের মন্তব্য হিসেবে লেখা, “কর্ম বিরতিতে যারাই যাবে তাদের আর ফেরানো হবে না। সাথে সাথে ৩ দিনেই হবে নতুন নিয়োগ-উপদেষ্টা ড.আসিফ নজরুল।” ব্যক্তিগত পোস্টের পাশাপাশি কিছু স্থানীয় গণমাধ্যমের ফেসবুক পেজ (১, ২) থেকেও এই ভুয়া উক্তিটি উপদেষ্টার নামে ছড়ানো হয়। তবে কোনো পোস্টেই উক্ত মন্তব্যের বিপরীতে কোনো সূত্রের উল্লেখ নেই।
পরবর্তীতে যাচাইয়ে দেখা যায় এমন কোনো মন্তব্য সম্বলিত প্রতিবেদন বাংলাদেশের কোনো গণমাধ্যমে নেই। শুধু ফেসবুকেই এই মন্তব্যের অস্তিত্ব মেলে।
মন্তব্যটি আসলেই এই আইন উপদেষ্টার কি না তা অধিকতর যাচাইয়ে ড. আসিফ নজরুলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে ডিসমিসল্যাব। অন্তর্বতী সরকারের এই উপদেষ্টা নিশ্চিত করেন, এমন কোনো কথা বলেননি তিনি। তাকে ভুলভাবে উদ্ধৃত করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের জেরে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এরপর রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দিলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গত ৮ আগস্ট দেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। হাসিনা সরকার পতনের পর থেকে একাধিক দাবিতে সর্বপ্রথম পুলিশ বাহিনী কর্মবিরতি ঘোষণা করে। এরপর আরও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠন কর্মবিরতি ঘোষণা করে আন্দোলন করে যার সর্বশেষ ছিল ডাক্তারদের কর্মবিরতি। গত শনিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ঢামেক) জরুরি বিভাগে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের মারধরের ঘটনার প্রেক্ষিতে সারা দেশে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন ঢামেকের নিউরো সার্জারি বিভাগের আবাসিক সার্জন আবদুল আহাদ। দেশের সকল ডাক্তারদের কর্মবিরতি চলাকালীন সময়েই আইন উপদেষ্টার কর্মবিরতি সম্পর্কে ভুয়া এই মন্তব্যটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
তবে ড. আসিফ নজরুলকে জড়িয়ে ভুয়া মন্তব্য প্রচারের ঘটনা এবারই প্রথম নয়। এর আগেও যমুনা টিভির শিরোনাম সম্পাদনা করে আইন উপদেষ্টাসহ ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকে নিয়ে ভুয়া মন্তব্য ছড়িয়ে পড়ে। ‘ধর্ম ব্যবসায়ী জামায়াতকে আর সুযোগ না দেয়ার আহ্বান দুই উপদেষ্টার’ শিরোনামে যমুনা টিভির লোগোযুক্ত একটি সংবাদের স্ক্রিনশট সে সময় ফেসবুকে শেয়ার হলে এ নিয়ে ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশের একটি তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান।