আহমেদ ইয়াসীর আবরার
বিকাশের ১৬ বছর পূর্তিতে বোনাস প্রদানের দাবিটি ভুয়া
আহমেদ ইয়াসীর আবরার
১৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ তার গ্রাহকদের ১৬,৯৯৯ টাকা উপহার হিসেবে দিচ্ছে– এমন দাবিতে বিজ্ঞাপন চলতে দেখা যাচ্ছে মেটার বিভিন্ন প্লাটফর্মে। যাচাইয়ে দেখা যায় যে বোনাস দেয়ার এই দাবিটি সত্য নয়। বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে এ ধরনের কোনো অফার দেওয়া হয়নি। কিন্তু মেটা অ্যাড লাইব্রেরিতে এই বিষয়ক প্রায় ২ হাজার বিজ্ঞাপন চলতে দেখা গেছে।
“চার্জ ফ্রি বিদ্যুৎ বিল” লিখে মেটা অ্যাড লাইব্রেরিতে সার্চ দিলে দেখা যায় অন্তত ৯টি পেজ থেকে ফেসবুকে প্রায় ২৯০০টি বিজ্ঞাপন চালানো হয়েছে ২৭ জুলাই থেকে যা এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্তও সক্রিয় ছিল। বিজ্ঞাপনগুলোর সঙ্গে যুক্ত লিংকে প্রবেশ করলে দেখা যায় “প্রিয় গ্রাহক। বিকাশের ১৬ বছর পূর্তি উপলক্ষে বিকাশ দিচ্ছে সবাইকে ১৬,৯৯৯ টাকা বোনাস।”- এই শিরোনামটি। নিচে লেখা শুধুমাত্র যারা ২ বছরের বেশি সময় ধরে বিকাশ ব্যবহার করছে তাদেরকে এই টাকা দেয়া হবে। এর ঠিক নিচে অসংখ্য মন্তব্য পাওয়া যায় যেখানে অনেকেই এই টাকা পেয়েছে দাবি করেছে। টাকা পেতে কী করতে হবে এমন নির্দেশনায় বলা হচ্ছে, টাকা পেতে অবশ্যই আপনার ১টি বিকাশ একাউন্ট থাকতে হবে, টাকা পেতে ফর্ম পূরণ করতে হবে এবং বিকাশে ৩০ হাজারের বেশি টাকা জমা থাকলে অন্য আরেকটি লিংকে তথ্য দিতে হবে। ৩০ হাজারের কম জমা থাকার ক্ষেত্রে ‘সেলিম স্টোর’ নামক একটি পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়। আর ৩০ হাজারের বেশি জমার ক্ষেত্রে ‘ফজল স্টোর’ নামের একটি পেমেন্ট গেটওয়েতে নিয়ে যায়। দুইটি গেটওয়েতেই বিকাশ নাম্বার, ওটিপি এবং পিনকোড চাওয়া হয়। এভাবে অনেকেই না বুঝে প্রতারণার শিকার হচ্ছে।
যে ৯টি পেজ থেকে এই লিংক বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করা হয়েছে সেই পেজগুলোতে এই সংক্রান্ত কোন পোস্ট পাওয়া যায় না। তবে কিছু পেজের প্রোফাইল ছবিতে একাধিক ফেসবুক ব্যবহারকারীকে কমেন্টে লিখতে দেখা যায় যে তারা এই পেজের বিজ্ঞাপনের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছে। আজকের অফার নামক পেজে একজন কমেন্ট করেছে, “বাই অফার লাগবেনা আমার জে টাকা নিছেন অই টাকা ফিরিয়ে দেন।” কথা১০ পেজে একজন ব্যবহারকারী কমেন্ট করেছে, “এরা প্রতারক কেউ এসব করবেন না।”
চলতি বছরের জুনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদ উপলক্ষে দেশের সকল জনগণকে ২৫-৩০ হাজার টাকা উপহার দেয়ার ভুয়া প্রতিশ্রুতির পোস্ট ফেসবুকে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রচার করা হয়। এটি নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে রিউমর স্ক্যানার ইনভেস্টিগেটশন ইউনিট। প্রতিবেদনে বলা হয় এই বিজ্ঞাপনের পেছনে প্রতিদিন বাংলাদেশের টাকায় প্রায় সাত লক্ষ সাত হাজার সাতশো টাকা খরচ করা হয়েছে।