আহমেদ ইয়াসীর আবরার
সাপের কামড়ে মৃত্যুর পুরোনো ঘটনা ছড়াচ্ছে সাম্প্রতিক বলে
আহমেদ ইয়াসীর আবরার
যশোরে বাড়ির উঠানে খেলতে গিয়ে বিষধর সাপ রাসেল ভাইপারের কামড়ে একটি শিশুর মৃত্যু হয়েছে এমন দাবিতে পোস্ট (১, ২, ৩) ছড়াতে দেখা যাচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। আবার একাধিক পোস্টে একই শিশুর ছবি পোস্ট করে এটিকে কক্সবাজারের (১, ২) সাম্প্রতিক ঘটনা বলেও দাবি করা হচ্ছে। তবে যাচাইয়ে দেখা যায়, এটি দুই বছর আগের কক্সবাজারের একটি পুরোনো ঘটনা।
সম্প্রতি বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে রাসেলস ভাইপার নামের বিষধর সাপের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার বিভিন্ন সংবাদ একাধিক গণমাধ্যমে এসেছে (১, ২, ৩, ৪)। বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমানে বাংলাদেশের ঠিক কতগুলো জেলায় এই সাপের অস্তিত্ব রয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, নওগাঁ, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর পাবনা, শরীয়তপুর, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, বাজিতপুর থেকে শুরু করে ঢাকার পার্শ্ববর্তী সাভারেও রাসেলস ভাইপারের দংশনের ঘটনা ঘটেছে।
এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি যশোরে বাড়ির উঠানে খেলতে গিয়ে রাসেল ভাইপারের কামড়ে শিশুর মৃত্যু হয়েছে– এমন দাবিতে শিশুটির ছবিসহ পোস্ট প্রচারিত হচ্ছে ফেসবুকে। ডিসমিসল্যাবের যাচাইয়ে দেখা যায়, এটি আসলে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলায় সাপের কামড়ে নিহত একটি শিশুর ছবি। তবে এটি কোনো সাম্প্রতিক ঘটনা নয়। সাদেক মো. জিহান নামের এই শিশু সাপের কামড়ে মারা গিয়েছিল দুই বছর আগে, ২০২২ সালে। এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ হয় একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২, ৩)। তবে প্রতিবেদনগুলোতে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর ব্যাপারেও কোন তথ্য দেয়া হয়নি। অর্থাৎ, ২০২২ সালে বিষাক্ত সাপের কামড়ে মারা যাওয়া একটি শিশুর ছবি নতুন ঘটনা বলে প্রচার করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রাসেলস ভাইপার বা চন্দ্রবোড়ার কামড়ে মানুষ মারা যাওয়ার একাধিক ঘটনা গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে। গত ২০ জুন ঢাকার ধামরাই উপজেলায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে এক বৃদ্ধা সাপের কামড়ে মারা গেলে এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে যে রাসেলস ভাইপারের কামড়ে এই মৃত্যু হয়েছে। যদিও নিশ্চিত করা যায়নি সাপটি কোন প্রজাতির ছিল। রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলে বিষধর রাসেল ভাইপার সাপের কামড়ে গত দেড় মাসে অন্তত তিনজন কৃষকের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে বলে এসেছে গণমাধ্যমে।
যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের পরামর্শ হচ্ছে, সাপ কামড়ালে শান্ত থাকতে হবে এবং অতিদ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। শরীরের যে স্থানে সাপ কামড়েছে সেটি যতটা কম সম্ভব নড়াচড়া করতে হবে, ঘড়ি বা অলঙ্কার পড়ে থাকলে তা খুলে ফেলতে হবে। কাপড়ের বাঁধ ঢিলে করতে হবে, তবে খোলা যাবে না।