আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব
এপ্রিল ৯, ২০২৪
১৪:৫৫:৫৪
ভয়াবহ শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভিয়েতনামের
This article is more than 1 year old

ভয়াবহ শিশু নির্যাতনের ভিডিওটি বাংলাদেশের নয়, ভিয়েতনামের

এপ্রিল ৯, ২০২৪
১৪:৫৫:৫৪

আহমেদ ইয়াসীর আবরার

রিসার্চ অফিসার, ডিসমিসল্যাব

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্প্রতি একটি ভিডিও পোস্ট হতে দেখা যায়, যেখানে এক ব্যক্তি একটি শিশুকে নিষ্ঠুরভাবে মারধর করছেন। ভিডিওটি বাংলাদেশে ফেসবুকের বিভিন্ন আইডি, পেজ ও গ্রুপে শেয়ার হচ্ছে এবং এটি দেশেরই ঘটনা এমন বিভ্রান্তি তৈরি হচ্ছে। যাচাইয়ে দেখা যায় ঘটনাটি ভিয়েতনামের।

“সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখলাম, অনেকে দাবি করেছেন, লোকটি নাকি শিশুটির বাবা হয়। আমার তো দেখেই কলিজা এফোঁড়ওফোঁড় হয়ে গেলো! তাহলে একটা লোক নিজের সন্তানকে এভাবে কি প্রহার করতে পারে? আহ! মানুষ কি ঢালাওভাবে আশরাফুল মাখলুকাত?”- এই ক্যাপশনসহ ভিডিওটি শেয়ার দেওয়া হয় প্রিয় বাংলাদেশ নামক একটি পেজ থেকে। ভিডিওতে একটি শিশুকে বেধড়ক মারধর করার দৃশ্য রয়েছে। ভিডিওটি সম্পাদনা করে তার ওপর ‘প্রিয় বাংলাদেশ’ পেজের নাম বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে পরোক্ষভাবে আভাস দেওয়া হচ্ছে যে ঘটনাটি বাংলাদেশেরই। ভিডিওটি ফেসবুকের আরো কিছু গ্রুপ ও আইডি থেকে শেয়ার হতে দেখা যায় (, , )।

ভিডিওটি যাচাই করতে গেলে ডিসমিসল্যাবের সামনে আসে ভিয়েতনামের নুয়াই দুয়ো তিন নামের একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সংবাদ। গত ১৫ মার্চ প্রকাশিত এই সংবাদের শিরোনাম: “ক্রমাগত বাড়ছে শিশু নির্যাতন: শিশুরা মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হতে পারে, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া জরুরি”। এই সংবাদের সঙ্গে পাওয়া যায় বাংলাদেশে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর দৃশ্য। ভিয়েতনামের ওই গণমাধ্যমের খবরে আরো বলা হয়, ঘটনাটি সে দেশের বিন ফুক প্রদেশের। লে দুক থাঙ নামের এক ব্যক্তি মদ্যপ অবস্থায় সৎ ছেলেকে এভাবে  নির্যাতন করেন বলে প্রতিবেদনটিতে বলা হয়।

প্রিয় বাংলাদেশ পেজের পোস্টের নিচে মন্তব্য করে অনেক ফেসবুক ব্যবহারকারী নির্যাতনকারীকে আইনের আওতায় আনার কথা বলেছেন। ভিডিওটিতে ঘটনার স্থান-কাল-পাত্র উল্লেখ না থাকায় অনেকের মনে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।

যাচাইয়ে স্পষ্ট হয়, শিশু নির্যাতনের দৃশ্যটি ভিয়েতনামে ধারণ করা, যা এসেছে ওই দেশের গণমাধ্যমেও। সংবাদ বা তথ্যের সাথে স্থান-কাল-পাত্র উল্লেখ না করায় ইতিপূর্বেও মানুষের বিভ্রান্ত হওয়ার ঘটনা দেখা যায়। শিক্ষকদের জিন্স ও টি-শার্ট পরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের একটি ঘটনা ভারতে ঘটলেও, শিরোনামে স্থান নিয়ে কোনো উল্লেখ না থাকায় এটি নিয়ে মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে বিভ্রান্তি। আবার, ১৩ বছরের বালককে বিয়ে দেয়ার ঘটনাটি পাকিস্তানের হলেও, ফেসবুক পোস্টে যথার্থ তথ্যের উল্লেখ না থাকায় মানুষ এটিকে বাংলাদেশের ঘটনা বলে বিশ্বাস করে নেয়।

আরো কিছু লেখা