তামারা ইয়াসমীন তমা
বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আফগান গায়িকার মৃত্যুর ভুয়া সংবাদ
তামারা ইয়াসমীন তমা
বাংলাদেশের একাধিক গণমাধ্যমে (১, ২, ৩) সম্প্রতি আফগানিস্তানের জনপ্রিয় গায়িকা হাসিবা নুরিকে পাকিস্তানে গুলি করে হত্যা করার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকেও (১, ২, ৩, ৪) এমন মৃত্যুর খবর প্রচারিত হয়েছে। তবে একাধিক সূত্রের বরাতে জানা গেছে, এই গায়িকার মৃত্যুর সংবাদটি সঠিক নয়।
মূলত ভারতীয় কিছু গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের (১, ২, ৩, ৪, ৫ ) সূত্র উল্লেখ করে বাংলাদেশের গণমাধ্যমগুলো জানায়, পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়াতে ৩৮ বছর বয়সী আফগান গায়িকা হাসিবাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
এর আগে গত কয়েকদিন ধরেই সামাজিক মাধ্যমে হাসিবা নুরির মৃত্যু নিয়ে নানা বিভ্রান্তিকর বক্তব্য ছড়াতে দেখা গেছে। কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর সংবাদের সঙ্গে হাসপাতালে শয্যাশায়ী অবস্থার ছবিও যুক্ত করা হয়েছে।
এরপরই পাকিস্তানি সাংবাদিক ইফতিখার ফিরদাউস নুরির মৃত্যু সংবাদ ভিত্তিহীন দাবি করে তাঁর সঙ্গে ভিডিও কলের একটি স্ক্রিনশট টুইটারে শেয়ার করেন।
আরেকটি টুইটবার্তায় তিনি লেখেন, “ফ্যাক্ট চেক: মাত্রই আফগান গায়িকা হাসিবা নুরির সঙ্গে কথা বললাম, যিনি খাইবার পাখতুনখোয়ায় নিহত হয়েছেন বলে দাবি করা হচ্ছে। নুরি সুস্থ এবং বেঁচে আছেন। তিনি আছেন করাচিতে। সামাজিক মাধ্যম ও কিছু সংবাদ মাধ্যমে তাঁর মৃত্যু সংবাদ প্রচারিত হয়েছে। তাঁর ছবিটি একটি অস্ত্রেপচারের সময় নেওয়া হয়েছিল এবং সেসময় তিনি অ্যানেস্থেশিয়ার কারণে অচেতন ছিলেন”।
তবে, নুরির মাথায় ব্যান্ডেজ বাঁধা ছবি নিয়ে মন্তব্যের ঘরে একজন প্রশ্ন করলে ইফতিখার ফিরতি মন্তব্যে জানান, তিনি এ বিষয়ে নুরিকে প্রশ্ন করেছিলেন। নুরি তাঁকে জানিয়েছেন যে, মাথায় আঘাত পাওয়ার তার নাক দিয়ে মাত্রাতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছিল, তাই চিকিৎসকেরা তাঁর নাকে তুলা দিয়ে রেখেছিলেন।
এছাড়া সালিহ মোহাম্মদ সালিহ নামের একজন আফগান সাংবাদিকও তার ভেরিফাইড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে নুরির একটি ভিডিও পোস্ট করেন যেখানে তাকে দারি ও পশতু ভাষায় কথা বলতে শোনা যায়।
একই ভিডিও ইফতিখার ফেরদৌসও তাঁর টুইটারেও পোস্ট করেছেন।
ইতোমধ্যে পাকিস্তানের একাধিক ফ্যাক্টচেকিং সংস্থা এটি যাচাই করে ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এছাড়া আফগানিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম এএমইউ টিভির ফেসবুক পেজেও হাসিবা নুরি জীবিত আছেন বলে খবর প্রকাশ করা হয়।
৩৮ বছর বয়সী নুরি ঐতিহ্যবাহী পশতুন লোকগানকে নতুনভাবে পরিবেশন করে জনপ্রিয়তা লাভ করেন। এএমসি ও আরিয়ানা টেলিভিশনের মতো বেশ কয়েকটি আফগান চ্যানেলেও তাঁর উপস্থিতি ছিল। মিনা, সাবজা জানাম, আলা ইয়ারামের মতো গান দিয়ে তিনি দর্শকদের মাঝে সাড়া ফেলেন।