নোশিন তাবাসসুম

মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপি সমর্থকরা বাসে আগুন দিয়েছে বলে পুরোনো ভিডিও প্রচার
নোশিন তাবাসসুম
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) মনোনয়ন না পেয়ে সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মনোনয়নবঞ্চিত আসলাম চৌধুরীর সমর্থকেরা একটি বাসে আগুন দিয়েছে দাবিতে একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ডিসমিসল্যাব ফ্যাক্টচেক করে দেখেছে, ভিডিওটি ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে একটি চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নামের একটি পেজ থেকে একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়। ক্যাপশনে বলা হয়, “ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড এলাকায় বিএনপি’র মনোনয়ন বঞ্চিত আসলাম চৌধুরীর সমর্থকরা. সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে.. ❗ 👉দেশে আবারো আগুন সন্ত্রাস ফিরে আসলো”। একই দাবিতে ফেসবুকে একাধিক ব্যক্তিগত প্রোফাইল (১, ২, ৩, ৪, ৫, ৬), পেজ (১, ২) এবং গ্রুপে (১, ২, ৩) একই ভিডিও পোস্ট করতে দেখা যায়।

১৮ সেকেন্ডের ভিডিওটিতে দেখা যায়, সোহাগ নামের গোলাপি রঙের একটি বাসে আগুন জ্বলছে। বেশ কিছু প্রত্যক্ষদর্শী মোবাইলে ঘটনাটি ভিডিও করছেন।
ভিডিওর সূত্র যাচাই করতে ডিসমিসল্যাব রিভার্স ইমেজ সার্চ করে সময় টিভির একটি ইউটিউব শর্টস পায়। ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর প্রকাশিত ইউটিউব শর্টসটির শিরোনাম, “হঠাৎ আগুনে পুড়লো বাস #narayanganj #bus #shorts”। ৩২ সেকেন্ড দৈর্ঘ্যের ভিডিওর প্রথম ১৮ সেকেন্ডের সাথে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি হুবহু মিলে যায়।

অধিকতর যাচাইয়ে ‘নারায়ণগঞ্জ’ ‘রূপগঞ্জ’ ‘বাস’ ও ‘আগুন’ – সূত্র ধরে কিওয়ার্ড সার্চ করা হয়। অনুসন্ধানে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত একাধিক (১, ২, ৩, ৪) প্রতিবেদন পাওয়া যায়। সময় টিভির ২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, “নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হঠাৎ একটি চলন্ত বাসে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আগুনে কেউ দগ্ধ না হলেও আতঙ্কে হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে কমপক্ষে ১০ যাত্রী আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান শুরু করে। প্রাথমিকভাবে তাদের ধারণা, বাসের ইলেকট্রিক ওয়্যারিংয়ের তার বা যন্ত্রাংশ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকতে পারে।”

প্রতিবেদনে রূপগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিমের বরাতে জানানো হয়, পুড়ে যাওয়া বাসটি উদ্ধার করা হলেও আগুন লাগার কারণ সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি। আগুনের সূত্র সম্পর্কে নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছিল বলেও জানান তিনি।
প্রতিবেদনে ব্যবহৃত ছবির সঙ্গে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে থাকা জ্বলন্ত বাসের দৃশ্যের হুবহু মিল আছে। অর্থাৎ, বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে সোহাগ পরিবহনের একটি বাসে আগুন দেওয়ার দাবিতে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটি আসলে দুই বছর আগে নারায়ণগঞ্জে বাসে অগ্নিকাণ্ডের ভিন্ন ঘটনার। প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে ২৩৭টি আসনে প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল- বিএনপি।